
শনিবার, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু শিক্ষকদের সংগঠন ওয়েবকুপার (WBCUPA) এক সভায় যোগ দিতে এসে ছাত্রদের তীব্র ছাত্র বিক্ষোভের সম্মুখীন হন। সভা শেষে বেরোনোর সময় আন্দোলনরত ছাত্ররা মন্ত্রীর গাড়ির চাকার হাওয়া ছেড়ে দেয় এবং গাড়ির বনেটে ‘চোর’ শব্দটি লিখে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ‘চোর-চোর’ এবং ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও তোলে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন মন্ত্রীর গাড়ি এবং সঙ্গে থাকা দু’টি পাইলট কারে ভাঙচুর চালানো হয় ও পরে শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। ব্রাত্য বসু জানান, গাড়ির কাচের টুকরো গায়ে লেগে তিনি আহত হয়েছেন এবং চিকিৎসার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে যাচ্ছেন।
বিক্ষোভের সময়, ওয়েবকুপার সদস্যদের সঙ্গে আন্দোলনরত ছাত্রদের ধস্তাধস্তি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্রকে লাঠি হাতে তাড়া করেন বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের কয়েকজন সদস্য। নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে সরিয়ে নেন। ধস্তাধস্তির মধ্যে এক ছাত্রের মাথা ফেটে যায় এবং দুই অধ্যাপক আহত হন। এক মহিলা অধ্যাপকের শাড়ি ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে আন্দোলনরত ছাত্রদের বিরুদ্ধে কিন্তু ঘটনার সত্যতা যাচাই হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরোনোর আগে ব্রাত্য বসু বলেন, “এই গুন্ডামি চলতে পারে না। পড়ুয়াদের চার জন প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতে পারি। কিন্তু সবাই মিলে গুন্ডামি করলে মুশকিল। তবে আমি কোনও প্ররোচনায় পা দেব না। যাঁরা এগুলি করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে উপাচার্য পদক্ষেপ করবেন।”
উল্লেখ্য, শনিবার বেলা ২ নম্বর গেটে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলি বিক্ষোভ দেখায়। পাল্টা মানববন্ধন তৈরি করেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। ব্রাত্য বসুকে ৩ নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করিয়ে ওপেন এয়ার থিয়েটারের পিছন দিয়ে মঞ্চে তোলা হয়।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এসএফআই-এর সমালোচনা করে ফেসবুকে লেখেন, “অসভ্য”, “বাঁদরামি সীমা” পার করেছে। তিনি লেখেন, “অধ্যাপক ডঃ প্রদীপ্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যাদবপুরে যারা এই অসভ্যতা করল, তাদের এবং ওই সংগঠনগুলিকে চিহ্নিত করে রাখা দরকার। প্রদীপ্ত নিপাট ভদ্রলোক। তার সঙ্গে বাঁদরামি করা কয়েকটা অসভ্যের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা দরকার। তৃণমূলের সৌজন্য মানে দুর্বলতা নয়। গায়ে হাত দেবে কেন? শাসক বলে সংযত নিশ্চয় থাকা উচিত। কিন্তু বাঁদরামি সীমা পার করলে উপযুক্ত জবাব দেওয়া উচিত।”
এই ঘটনায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।