Monday, April 21, 2025
35 C
Kolkata

পার্ক সার্কাস হজ হাউসের পাশে ছাত্রী নিবাস নির্মাণের জন্য পূর্বতন সরকারের বরাদ্দকৃত ১২ কাঠা জমি এখনও পড়ে রয়েছে। কেন ও কি কারণে?

ডঃ আব্দুর সাত্তার
পার্ক সার্কাস, দিলখুশা স্ট্রীটে মেয়েদের ছাত্রাবাসে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে পড়তে আসা পড়ুয়াদের জায়গা দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। স্থান না পেয়ে শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন জায়গায় মেসে বাধ্যতামূলক অবলম্বন হিসেবে তাদের থাকতে হয়। বাবা – মাও উদ্বেগে থাকেন। সেই কথা ফোন করে আমাকে বলতেনও। তাই আরও একটি ছাত্রী আবাস নির্মাণ প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছিল। কিন্তু সমস্যা হলো জমি কোথায় পাওয়া যাবে? তাছাড়া নিরাপত্তার বিষয়টিও খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া, এই রাস্তার উপরেই এ. কে. ফজলুল হক- এর নামে কর্মরত মুসলিম মহিলা নিবাসের কাজ চলছিল।
জানতে পারলাম দিলখুশা স্ট্রীটে হজ হাউসের পাশেই কলকাতা কর্পোরেশনের ১২ কাঠা জমি আছে। চেষ্টা শুরু করলাম। তৎকালীন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ও বামফ্রন্টের চেয়ারম্যানকে বিষয়টির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে বললাম। তাঁরা রাজি হলেন। সেই সময় মেয়র ছিলেন বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। মাননীয় বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান কমরেড বিমান বসু তাঁকে এই প্রস্তাবের কথা বলতেই তিনি বললেন, এই জমি তো পি আর সি চেয়েছে জনস্বাস্থ্যের- এর সার্বিক উন্নতির জন্য। আমি কথাও দিয়ে দিয়েছি। এটা ঠিক যে, পি আর সি – এর এই ক্ষেত্রে এক উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। যাই হোক, শেষ পর্যন্ত ১ টাকার বিনিময়ে জমি পাওয়া গেল। কর্পোরেশন সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তরকে জমি হস্তান্তর করে দিল।
অতঃপর সেই জমিতে সাত তলা ছাত্রী আবাস নির্মাণের জন্য পি ডব্লিউ ডি -কে দায়িত্ত্ব দেওয়া হলো। নিচের তলা অনুষ্ঠানের জন্য, প্রথম তলা ডিজিটাইজ গ্রন্থাগার ও বাকি পাঁচটি তলা থাকবে মেয়েদের বসবাসের জন্য। পি ডব্লিউ ডি কাজ শুরু করতে গিয়ে প্রতিরোধের মুখে পড়ল। আমাকে সেখানে দাঁড়িয়ে শুনতে হলো এখানে কোনো ধরনের নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না। ফাঁকা জমি ফাঁকা রাখতে হবে। না – হলে নাকি ব্যাপক গোলমাল হবে! সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, রিজওয়ানুর মামলা, আলিয়ার পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাসের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীকে কালো পতাকা প্রদর্শন — সব মিলিয়ে পরিস্থিতির গুণগত পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিল। বোঝানো হলো, কে, কোথা থেকে নির্দেশ দিচ্ছেন? পুলিশ প্রশাসনও ঝুঁকি নিতে চাইছিল না। ছাত্রী আবাস নির্মাণ আর হলো না।
প্রায় ১৩ বছরের বেশি এই জমি পড়ে রয়েছে। এই সরকারও ১০ বছরে কোনও উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেয় নি। সরকার এই জমিতে ছাত্রী আবাস নির্মাণ করে কি কৃতিত্ব নিতে পারত না? অন্তত জেলা থেকে পড়তে আসা পড়ুয়াদের জায়গা দেওয়া যেত। বাবা – মা – পরিবার – পরিজন একটু হলেও নিশ্চিন্ত হতে পারতেন।
সেই সময় কেউ পাশে দাড়ায় নি। বরং চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে বিরোধিতা করেছিল। এই সময়ে কিছুই তো আর সেই ভাবে হলো না। যেটুকু করা গিয়েছিল, সেটুকুও অন্তত রক্ষা হোক। তার জন্য যারাই চেষ্টা করবে তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ ।

Hot this week

জয় শ্রী রাম স্লোগান না দেওয়ায় মুসলিম কিশোরকে ভাঙ্গা কাঁচের বোতল দিয়ে বেধড়ক মার

উত্তরপ্রদেশের কানপুর গ্রামীণ এলাকার মহারাজপুর থানার অধীন সরসৌল অঞ্চলে...

চিনের সঙ্গে রেকর্ড বাণিজ্য ঘাটতি—ভারতীয় বাজারে বিপদ আমদানি বৃদ্ধির ঢেউ!

চিনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি দিন দিন বেড়েই চলেছে।...

মুর্শিদাবাদে হিংসার আগুনে জনরোষ: “লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নয়, চাই মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ”” জানালেন স্থানীয় মহিলারা

মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক হিংসায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। আজ ধুলিয়ান, বেতবোনা...

Topics

জয় শ্রী রাম স্লোগান না দেওয়ায় মুসলিম কিশোরকে ভাঙ্গা কাঁচের বোতল দিয়ে বেধড়ক মার

উত্তরপ্রদেশের কানপুর গ্রামীণ এলাকার মহারাজপুর থানার অধীন সরসৌল অঞ্চলে...

ভূমিকম্পে কাঁপল উত্তর-পূর্ব, আতঙ্কে দিন শুরু নাগরিকদের

পৃথিবীর ভূত্বকের পরিবর্তনশীল প্রকৃতি কখন যে কোন অঞ্চলে প্রাকৃতিক...

আদালতের নির্দেশে ভাঙল নির্মাণ, অভিযোগ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার

নির্মাণ সংক্রান্ত নিয়মভঙ্গের অভিযোগে মধ্যমগ্রামে এক ব্যক্তির বাড়ি ভাঙল...

Related Articles

Popular Categories