রফিকুল ইসলাম মামুন
সিলেট জেলা প্রতিনিধি
ঐতিহ্যবাহি বিদ্যাপীঠ সিলেটের এমসি কলেজের হোস্টেলে স্বামীকে বেধে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করেছে ছাত্রলীগ কর্মীরা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় স্ত্রীকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করেছে। এ ঘটনায় সিলেটে তোলপাড় চলছে। মধ্যরাত পর্যন্ত পুলিশ অভিযান চালালেও ধর্ষণের সাথে জড়িত কোনো নরপশুকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে বেড়াতে আসেন সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলাকার বাসিন্দা এক দম্পত্তি। রাত ৯ টার দিকে কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী স্বামীকে মারধর করে স্ত্রীকে জোরপূর্বক ছিনিয়ে মহিলা ছাত্রী নিবাসে নিয়ে যায়। পরে স্ত্রীর পিছু পিছু স্বামী ছাত্রাবাসে পৌছলে তাকে রশি দিয়ে বেধে ফেলে ছাত্রলীগ কর্মীরা। এক পর্যায়ে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে আসা ওই বধুকে ৫-৬ জন ছাত্রলীগ কর্মী পালাক্রমে ধর্ষন করে।
খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হলে ছাত্রলীগ কর্মী পরিচয়ধারি নরপশুরা পালিয়ে যায়।
এদিকে- গুরুতর অবস্থায় ওই বধুকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। স্ত্রীর সঙ্গে হাসপাতালেও রয়েছেন স্বামী। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) জ্যোর্তিময় সরকার জানিয়েছেন- পুলিশ গিয়ে স্বামী-স্ত্রীকে ছাত্রী নিবাস থেকে উদ্ধার করে। এরপর স্ত্রীকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার পরপরই পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ধর্ষক ছাত্রলীগ কর্মীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানান তিনি। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে- নব নির্মিত ওই ছাত্রী নিবাসটি ফাকা রয়েছে। এ কারণে সেখানে বখাটেরা রাতে আড্ডা দিতো।
এদিকে-ধর্ষক ছাত্রলীগ কর্মীরা টিলাগড় কেন্দ্রীক রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে। তারা করোনাকালে ফাকা হোস্টেলে আড্ডার পাশাপাশি জুয়া খেলা ও মাদক সেবন করতো বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তারা বলেন এ নিয়ে বার বার অভিযোগ জানালেও কলেজ কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করেনি।
এদিকে সিলেটের ঐতিহ্যবাহি বিদ্যাপীঠ এমসি কলেজের হোস্টেলে ধর্ষণকারিদের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সিলেটের পবিত্র মাটিতে এ ধরনের ন্যাক্ষারজনক ঘটনার তীব্রনিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন সুশীল সমাজ সহ সর্বস্থরের আপামর জনসাধারণ অনিতিবিলম্বে মানুষরুপি ঐ সমস্ত নরপশুদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের প্রতি জোরদাবী জানানো হচ্ছে।