নিজস্ব প্রতিনিধি, এনবিটিভি, চাঁচল : মালদার রতুয়া-১ ব্লকের সামসি পঞ্চায়েতে তৃণমূলের প্রতীকে জেতা চার সঞ্চালককে সরানোর তলবিসভা আজ সোমবার। এই সভা ঘিরে টানটান উত্তেজনা থাকায় তটস্থ রয়েছে প্রশাসন। নিজের দলের চার গ্রামপঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে অনাস্থা ডেকেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রধান শ্রবণকুমার দাস। শুধু তাই নয়, নিজের দলের চার সঞ্চালককে সরাতে কংগ্রেস ও বিজেপির সাথে হাত মেলাতে কোন কসুর ছাড়েনি তৃণমূল প্রধান। আর এজন্য তিনি প্রচ্ছন্ন মদত পেয়েছেন ব্লক তৃণমূল সভাপতি ফজলুল হকের এমনটাই অভিযোগ। এই ঘটনা নিয়ে দলের অন্দরেই শুরু হয়েছে চাপানউতোর ও তীব্র উত্তেজনা।
রতুয়া-১ ব্লক সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সামসী গ্রাম পঞ্চায়েতের কুড়িটি আসনের ১২টি দখল করে তৃণমূল কংগ্রেস। পাঁচটিতে কংগ্রেস ও তিনটিতে বিজেপি জেতে। পরবর্তীতে বিজেপির এক সদস্যা মারা যাওয়ায় এখন পঞ্চায়েতে স্থায়ী সমিতি সহ মোট সদস্য ২২ জন। প্রধানের পক্ষে রয়েছেন তৃণমূলের মোট পাঁচ সদস্য। বাকি নয়জন প্রধানের এই অনৈতিক কাজের বিরোধিতা করায় তৃণমূল প্রধান আশ্রয় নিয়েছেন কংগ্রেস ও বিজেপির। একাজে ব্লক তৃণমূল সভাপতি ফজলুল হক সহ জেলা তৃণমূলের কিছু নেতা প্রধানের দলবিরোধী কাজে মদত দিচ্ছেন। নইলে তৃণমূলের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্বেও কেন এই অনাস্থা এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে দলের অন্দরে। তবে কি স্বজনপোষন ও নিজের মর্জিমতো বোর্ড চালানোর জন্য বিরোধী কংগ্রেসের দলনেত্রী সহ বিজেপির দুই সদস্যের সহায়তায় বিডিওর কাছে তার নিজের দলের চারজন সঞ্চালকের বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করেছেন তৃণমূল প্রধান? এই নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব নীরব।
দলের সঞ্চালকদের বিরুদ্ধে দলেরই প্রধান অনাস্থা ডাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের নয়জন সদস্য ব্লক তৃণমূল সভাপতি ফজলুল হকের দ্বারস্থ হয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কিন্তু সভাপতি ফজলুল হক এসবে পাত্তা না দিয়ে প্রধানের পাশে দাঁড়ানোয় তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ব্লক সভাপতি ফজলুল হক জানান, আমার কিছু জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি। এবিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি মুশারফ হোসেন জানান, পঞ্চায়েতে দীর্ঘদিন ধরে একটা অচলাবস্থার কথা শুনেছি। এ নিয়ে দলের প্রতীকে জেতা সদস্যরা যদি ব্লক সভাপতির দ্বারস্থ হয়ে থাকেন তবে তার উচিত ছিল বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার। এ বিষয়ে কেন তিনি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি তা জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নূরকে বিবেচনা করার অনুরোধ জানাই। এবিষয়ে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রীর অবশ্য কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।