দেশের অর্থনীতিতে স্থায়ী উন্নতির জন্য চাহিদা বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির গুরুত্বের উপর জোর দিলেন প্রাক্তন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর রঘুরাম রাজন এবং ডি সুব্বারাও। তাঁদের মতে, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলির সঙ্গে উচ্চ মধ্যবিত্তরাও চাহিদার সংকটে ভুগছে।
রঘুরাম রাজন জানান, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে তাদের হাতে বাড়তি পুঁজি দেওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, “চাহিদা তখনই বাড়বে, যখন মানুষের আয় এবং চাকরির সুযোগ বাড়বে। আয় বৃদ্ধি পেলে মানুষ খরচ করতে স্বচ্ছন্দ বোধ করবেন। আর চাহিদা বাড়লে লগ্নিও বাড়বে।”
তিনি আরও বলেন, অর্থনীতির সাম্প্রতিক ঝিমুনির জন্য লগ্নি ও চাহিদার ঘাটতি দায়ী। অতিমারির আগেও অর্থনীতি দুর্বল ছিল, আর কোভিডের পরের উত্থান ছিল মূলত হারানো জমি ফিরে পাওয়ার প্রক্রিয়া।
ডি সুব্বারাও মনে করেন, সমাজের নিম্নবিত্ত অংশের কর্মসংস্থান এবং আয় বৃদ্ধি হলে তা চাহিদা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। তিনি বলেন, “কর্মসংস্থানের মাধ্যমে সমাজের নীচের অংশের আয়ের বৃদ্ধি হলে উৎপাদন বাড়বে এবং আর্থিক বৃদ্ধি সম্ভব হবে।”
সুব্বারাও আরও উল্লেখ করেন, মোদী সরকারের জনপ্রিয়তা কাঠামোগত সংস্কারের জন্য কাজে লাগানো উচিত। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের দান-খয়রাতির প্রতিযোগিতা অর্থনীতির দীর্ঘমেয়াদি উন্নতির পথে বাধা।
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ সরকারের নীতিকে দায়ী করে বলেন, মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব এবং ঋণ শোধের চাপ সাধারণ মানুষের পকেট ফাঁকা করেছে। তিনি দাবি করেন, সরকার ধনীদের স্বার্থ রক্ষা করলেও নিম্নবিত্তদের কথা ভাবেনি।
আগামী বাজেটে চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির জন্য বিশেষ পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়েছেন দুই প্রাক্তন গভর্নর। তাঁদের মতে, চাহিদা বৃদ্ধি এবং বেসরকারি লগ্নি আকর্ষণ ছাড়া অর্থনীতির উন্নয়ন সম্ভব নয়।
এই পরিস্থিতিতে, চাহিদা বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের দিকে নজর না দিলে অর্থনীতির দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা আসবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। নির্মলা সীতারামনের বাজেটে সেই দিকেই নজর থাকবে বলে আশা করছেন সাধারণ মানুষ।