
বিশ্ব প্রযুক্তি ক্ষেত্র আবারো বড়সড় অনিশ্চয়তার মুখে। কর্পোরেট কাঠামোতে বড়সড় রদবদলের কারণে মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট আইবিএম (IBM) বিপুল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে। এই পদক্ষেপে কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে আমেরিকার বিভিন্ন অফিসে কর্মরতদের মধ্যে।
‘দ্য রেজিস্টার’-এর এক রিপোর্ট অনুযায়ী, আইবিএম তাদের ‘ক্লাউড ক্লাসিক’ বিভাগে কর্মরত প্রায় এক চতুর্থাংশ কর্মীকে ছাঁটাই করতে পারে। যদিও সংস্থা ঠিক কতজন কর্মীকে ছাঁটাই করবে, সে বিষয়ে এখনও নির্দিষ্ট কোনও বিবৃতি দেয়নি।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, এই ছাঁটাইয়ের প্রভাব পড়তে পারে ক্যালিফোর্নিয়া, নিউইয়র্ক, টেক্সাস, ডালাস, রেলিঘ, এবং উত্তর ক্যারোলিনার অফিসগুলিতে। সংস্থার ‘কনসালটিং’, ‘কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি’, ‘ক্লাউড ইন্ফ্রাস্ট্রাকচার’, ‘সেলস’, এমনকি ‘চিফ ইনফরমেশন অফিস’-এ কর্মরত বহু কর্মী এই ছাঁটাইয়ের আওতায় পড়তে পারেন।

এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে কর্মক্ষেত্রের ভৌগোলিক স্থানান্তর। আইবিএম চাইছে, কিছু নির্দিষ্ট কাজ আমেরিকা থেকে সরিয়ে তুলনামূলকভাবে কম খরচের দেশগুলোতে—বিশেষ করে ভারতে—স্থানান্তর করতে। এই উদ্দেশ্যে বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, হায়দরাবাদ ও পুনের মতো শহরে অবস্থিত আইবিএম অফিসগুলোতে কর্মী নিয়োগের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।
এর আগেও সংস্থার সিইও অরবিন্দ কৃষ্ণ জানিয়েছিলেন, আমেরিকার কর্মী সংখ্যা হ্রাস করে ভারতের মতো বাজারে কর্মী স্থানান্তর বা নতুন নিয়োগ বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এমনকি কম খরচে দক্ষ জনবল পাওয়ার লক্ষ্যে সংস্থা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তিও করেছে।
অন্যদিকে, যাঁরা আপাতত ছাঁটাইয়ের বাইরে থাকছেন, তাঁদের জন্য নতুন অফিস নীতিও কার্যকর হচ্ছে। সপ্তাহে অন্তত তিন দিন অফিসে এসে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’-এর সুবিধা কমতে চলেছে বলেই ইঙ্গিত মিলছে।
বিশ্বজুড়ে ছাঁটাইয়ের হাওয়া যতই তীব্র হোক, কর্মীদের নিরাপত্তাহীনতা কিন্তু ক্রমশ বাড়ছে। আইবিএমের এই সিদ্ধান্ত শুধু একক সংস্থার কর্পোরেট রদবদল নয়, বরং প্রযুক্তি দুনিয়ায় কাজের জায়গা ও পদ্ধতির পরিবর্তনের দিকেই ইঙ্গিত করছে। এখন দেখার, এই স্থানান্তর কর্মীদের ভবিষ্যৎ কীভাবে প্রভাবিত করে।