রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডঃ মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিপূরণের টাকা বিতরন, অসন্তুষ্ট নিহতর পরিজনরা

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

রামপুরহাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রামপুরহাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

রামপুরহাট, এনবিটিভিঃ সোমবার রামপুরহাটে ঘটে যাওয়া নৃশংস গন হত্যা কাণ্ডে উত্তাল রাজ্য তথা দেশও। একজন তৃণমূল উপ-প্রধান ভাদু সেখের বোমা হামলায় মৃত্যুকে ঘিরে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে এলাকা। এরপরেই উপ-প্রধানের অনুগামীরা উত্তাল হয়ে ওঠে। সেদিন রাতে গভীর রাতে আগুন লাগিয়ে দেয় তারা। এই ঘটনায়  মৃত্যু হয়েছে নয়জন মহিলা, একজন পুরুষ ও দুইজন শিশুর।

ঘটনার জেরে বিক্ষোভ চলছে গোটা রাজ্য জুড়ে। এর জন্য রাজ্যে বিজেপি নেতারা দ্বারস্থ হয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কাল কেন্দ্রী সরকারের তরফ থেকে তন্দন্তের জন্য পাঁচজনের একটি দল পাঠানো হয় যার মধ্যে রয়েছেন রাজ্যের দুই সাংসদ ও প্রাক্তন আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষ। বিজেপি নেতা সহ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানিয়েছে। বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বাগটুই গ্রামে যান পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং পরিবারের সদস্যদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

আজ বাগটুই গ্রামে গেলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে গিয়ে তিনি নিহত পরিজনদের হাতে নিহত পিছু পাঁচ লক্ষ টাকা তুলে দেন এবং বাড়ি তৈরির জন্য ২ লক্ষ টাকাসহ পরিজনদের সরকারী চাকরী দেওয়ার আশ্বাস দেন। এই ঘটনায় তারা পাঁচ লক্ষ টাকার চেক গ্রহন করলেও  ক্ষুব্ধ পরিজনেরা তারা এই নৃশংস ঘটনার সাথে যুক্ত দোষীদের শাস্তির দাবী জানাতে থাকেন তারা। মুখ্যমন্ত্রী মূল অভিযুক্ত আনারুলকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়।

অনেকের অভিযোগ, এদিন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই অনুব্রত মণ্ডলকে সাথে নিয়ে নিহত পরিবারের সাথে দেখা করার চেষ্টা করে। ইতিপূর্বে ভোটের সময় বা অন্যসময় অনুব্রতকে অনেক উস্কানি মূলক বক্তব্য দিতে দেখা গিয়েছিল। তাকে অনুব্রতকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রী সাথে করে নিয়ে গিয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডল।

মুখ্যমন্ত্রীর এই চেক বিলি ও চাকরির প্রতিশ্রুতিতে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। বিরোধীদের দাবি সত্য চাপার জন্য মুখ্যমন্ত্রী এই রকম কাজ করেছেন। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান বিরোধীরাও। অন্য দিকে ভাদু সেখের পরিবারের সঙ্গে দেখা না করায় তারা মুখ্যমন্ত্রী সাথে দেখা করতে হাসপাতালের দিকে রওনা হয়।

আজ ময়না তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। রিপোর্টে জানা যায় ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করার পর জীবিত অবস্থায় তাদের পুড়িয়ে খুন করা হয়েছে। ঘটনার জেরে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি, উত্তর থেকে দক্ষিণে এই নিয়ে চলছে বিক্ষোভ।

রাজ্যে প্রতিনিয়ত তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দে প্রান দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের। শুধুমাত্র কিছু টাকা আর চাকরীর আশ্বাস দিলেও প্রশাসনের ভূমিকা সেই একই নিস্ক্রিয় থেকেই যাচ্ছে। যেখানে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই পুলিশ মন্ত্রী তাহলে বেহাল কেন প্রশাসনিক কাঠাম? গত এক মাসে সংখ্যালঘু মুসলিমদের উপরে মৃত্যুর কালো ছায়া ঘনিয়ে এসছে যেন, তবুও হেলদোল নাই মুখ্যমন্ত্রীর। এই প্রশ্নের জবাব মেলেনা সংখ্যালঘুরা, শুধু মাত্র ভোটের সময় “ইনশা আল্লাহ” আর “মাশা আল্লাহ” বলেই যেখানে মন জয় করে নিতে পারে সেখানে কিছু প্রানের কি মূল্য থাকে।

যখন নিজের সিংহাসনের পায়া নড়বে তখনই হেলদোল দেখা যায়। যেখানে অল্পটাকায় আর দুটো শব্দে ভোট ব্যাঙ্ক ঝুলিতে ভর্তি হয়ে যায়, সেখানে দুধেল গাইদের কোন অসুবিধা নাই।

অনেকেরই অভিযোগ, রাজ্যে সংখ্যালঘুদের নিয়ে কংগ্রেস যেমন খেলা করে ছিল, ঠিক তেমনি বামফ্রন্টও। তবে দীর্ঘদিন কষ্টের ঘানি টানার পরে কংগ্রেস-বামেদের বুঝতে পেরে ঘাড় থেকে যখন ফেলে দিয়েছিল। এবার সেই একই করুণ অবস্থা তৃনমূলের আমলে। মুসলিমদের মধ্যে দ্বন্দ লাগিয়ে দিয়ে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যাস্ত। কবে যে এই বাঙ্গালি মুসলমান নিজেদের অস্ত্বিত টিকিয়ে রেখে মর্যাদার সাথে চলার জন্য সচেতন হবে সেটা কঠিন হয়ে পড়ছে। তবে একদিন সাধারণ মানুষ অবশ্যই বুঝবে যদি সমাজের চেতনা সম্পন্ন মানুষ ও নিজের বিবেক বিক্রি করে খাবেনা এমন মানুষের নেতৃত্ব পায়।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর