শিশুদিবসে সহজিয়ার শিশুদের ‘কিচিরমিচির-২০২১’

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

WhatsApp Image 2021-12-04 at 11.34.33 AM

গত ১৪ই নভেম্বর ২০২১ শিশু দিবসের দিন দমদমের থিয়ে-এপেক্সে এক অনন্য সন্ধ্যা দর্শকদের উপহার দিল বাগুইআটি সহজিয়া নাট্যসংস্থার ক্ষুদেরা। সহজ-কচিকাঁচাদের “কিচিরমিচির-২০২১” সত্যিই ছিল বেশ উপভোগ্য।

শালিনী বোসের নৃত্য ভাবনায় ছোট্ট বেদাশ্রী বোসের উদ্বোধনী নৃত্য পরিবেশনায় সূচনা হয় এই অনুষ্ঠানের।

এরপর কৃত্তিকা বোসের ‘ছোট্টবেলার গান’ দর্শকদের ভাসিয়ে নিয়ে যায় তাদের ফেলে আসা ছোটবেলায়। রাখালিয়া মেঠো বাঁশির সুর থেকে শুরু করে মায়ের মমতার আঁচলের ওম ও নিসঙ্গ দুপুরে মায়ের ঘুমপাড়ানি গান, অথবা বাবার আদর-ভালোবাসার ছোঁয়া, কিংবা ভাই-বোনেদের সাথে কাটানো সব মুহূর্তরা, আবার ধরা যাক স্কুলের বন্ধুদের সাথে খুনসুটি আর ভাগ করে খাওয়া টিফিন এসব ছিল কৃত্তিকার গানের বিষয়। তাকে সিন্থেসাইজারে যোগ্য সঙ্গত করেছে জ্যোতিষ্ক চ্যাটার্জী। এরপর ঋকদীপ পালের ভেন্ট্রিলোক্যুইজম ছিল পরবর্তী চমকে। তার কথা-বলা পুতুল “চমচম কুমার”-এর সাথে তার উপভোগ্য মজার আড্ডা মাতিয়ে তুলেছিল প্রেক্ষাগৃহ পরিপূর্ণ দর্শকদের।

এরপর, সেদিনের মূল আকর্ষণ ছিল প্রশান্ত সেনের রচনায় ও নির্দেশনায় এবং ছোট্ট দশ বছরের মেয়ে প্রত্যুষার একক অভিনীত নাটক “একলা মন”। প্রত্যুষার সাবলীল অভিনয় ৪০ মিনিট ধরে দর্শকদের চুপটি করে বসিয়ে রেখে মন কেড়েছে উপস্থিত দর্শকদের। খুব চেনা ছবির পটভূমিকায় রচিত এই নাটক। ছোট্ট ‘মন’ তার খেলনা ও পুতুলদের নিয়েই ভুলে থাকে তার একাকীত্বকে। কারণ, বাবা আর মা তো প্রায় সারাদিনই ব্যস্ত অফিস আর তাদের নিজেদের কাজ নিয়ে। এই কর্মব্যস্ত মা-বাবার একমাত্র মেয়ে মন বড়োই উপেক্ষিত, অবহেলিত। তাই তো ‘মন’-এর বড্ড মনখারাপ। এরপর অতিমারিজনিত লকডাউনের বন্দিদশা, দুর্যোগ, বিপর্যয়, ওলটপালট করে দিয়েছে স্বাভাবিক জীবনটাকেও। কিন্তু বন্দিদশা কি বদলে দিল ছোট্ট মনের জীবনের ধারা? অনেক জ্বলন্ত প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয় এই নাটক। সব মিলিয়ে গোটা নাটকের সংলাপ, অভিনয়, শব্দ ও আলো প্রক্ষেপণ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। এই নাটকের গানগুলো রচনা করেছেন নাট্যকার প্রশান্ত সেন স্বয়ং আর তাতে যথাযথ সুর দিয়েছেন অর্ণিশা সেন। নাটকের গানগুলোও গেয়েছেন তিনি। অর্ণিশা সেনের আবহ পরিকল্পনা ও প্রক্ষেপণ এবং লাইভ সিন্থেসাইজারে জ্যোতিষ্ক চ্যাটার্জি প্রশংসনীয়। মঞ্চ নির্মানে তন্ময় মণ্ডল ও সুদান হালদার ও সহজিয়ার অন্যান্য কর্মী-সদস্যরা, পোষাক ও রূপসজ্জায় দীপা রায় ও সম্রাজ্ঞী সাহা যথাযথ।

শেষ হয়েও শেষ-না হওয়া এই রঙচঙে সন্ধ্যা আরো জমে ওঠে ক্ষুদেদের সমবেত নাচে ও ‘লজেন্সকাকু’ সেজে তন্ময় মন্ডলের মজাদার উপস্থিতিতে।

সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানে আলোর দায়িত্বে থাকা সুবল কর্মকার নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করছে সহজিয়ার আরেক ক্ষুদে শিল্পী সম্রাজ্ঞী সাহা।
এই জমাটিয়া সন্ধ্যার শেষে বাগুইআটি সহজিয়ার কর্ণধার প্রশান্ত সেন বলেন, অনেকদিনের ইচ্ছে ছিল শিশুদের নিয়ে একটা সাংস্কৃতিক সন্ধে কাটানোর। আজ শিশুদিবসে শিশুরাই একটা রঙিন সন্ধ্যা উপহার দিয়ে মাতিয়ে তুলল আমাদের। আগামী দিনেও বাগুইআটি সহজিয়া এমন উদ্যোগ আরো নেবে।”

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর