নিউজ ডেস্ক : বকখালিতে গত বুধবার ভোরে ১২ জন মৎসজীবী নিয়ে উল্টে যায় এক ট্রলার। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই পুলিশ এবং কোস্টগার্ড ট্রলারটি উদ্ধারের অভিযান শুরু করে। গতকাল রাত্রে ট্রলারটি উদ্ধার করে উপকূলরক্ষী বাহিনী। মোট ১২ জনের মধ্যে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয় মাত্র দুইজনকে। বাকি ১০ জন নিখোঁজ ছিল গত রাত পর্যন্ত। রাতে উদ্ধার করার পর দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রলার এফবি হৈমবতী থেকে মেলে ৯ মৃতদেহ। এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা মৎস্যজীবীদের পরিবারগুলোকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।
বুধবার ভোর পাঁচটার সময় মাছ ধরে ফ্রেজারগঞ্জ মৎস্য বন্দরে ফেরার পথে বকখালির রক্তেশ্বরী চড়ের কাছে প্রচণ্ড এক ঢেউয়ে বারো জন মৎসজীবী-সহ এফবি হৈমবতী নামে ট্রলারটি উলটে যায়। ট্রলারডুবির ঘটনার পর নামখানার দশমাইল থেকে ট্রলারটিকে (Trawler) উদ্ধার করার জন্য রওনা দেয় ১৪টি মৎস্যজীবি ট্রলার। প্রায় ১০ ঘণ্টার প্রচেষ্টায় উদ্ধার করা হয় দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রলারটিকে। উপকূলে আনার পর ট্রলারের মধ্যে থেকে উদ্ধার হয় মৃতদেহ।
মৃত মৎস্যজীবীরা প্রত্যেকেই নামখানার হরিপুর, পাতিবুনিয়া, মহারাজগঞ্জ, দেবনিবাস, শিবপুর ও রাধানগরের বাসিন্দা। ইতিমধ্যেই মৃতদেহগুলি শনাক্ত করেছেন পরিবারের সদস্যরা। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহগুলি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। পেটের দায়ে ঝুঁকিকে সঙ্গী করে মাঝসমুদ্রে পাড়ি দেন মৎস্যজীবীরা। লক্ষ্য একটাই নুন আনতে পান্তা ফুরনোর সংসারে একটু অন্নের সংস্থান করা। পরিজনদের জন্য ঝুঁকি নিতে গিয়ে মৎস্যজীবীদের প্রাণহানির ঘটনায় শোকে পাথর সকলে। এবার কীভাবে সংসার চলবে, স্বজন হারানোর শোকের পাশাপাশি এই আশঙ্কাও গ্রাস করেছে নিহত মৎস্যজীবীদের অসহায় পরিজনদের। তারা জানিয়েছেন, সরকারি সাহায্যের একান্ত প্রয়োজন এখন তাদের। তবে কতটুকু সরকারি সাহায্য মিলবে সেটাই এখন দেখার।