মো. জাকিরুল ইসলাম
ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ
আজ ৩ নভেম্বর, সোমবার ঐতিহাসিক তেলিখালি যুদ্ধ দিবস। একাত্তরের এই দিনে ময়মনসিংহ জেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী হালুয়াঘাট উপজেলার তেলিখালি ক্যাম্প পাকিস্তানি সেনাদের কাছ থেকে দখলমুক্ত করতে ভারতীয় মিত্রবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা এক সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হয়। ২ নভেম্বর রাত তিনটা থেকে ৩ নভেম্বর ভোর পর্যন্ত দীর্ঘ সময় চলে এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, মুক্ত হয় তেলিখালি। জয় বাংলায় মুখরিত হয় ময়মনসিংহের সীমান্ত। দেশের ইতিহাসে এটি প্রথম সীমান্ত বিজয়। এর পর থেকে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে অনুভুত হতে থাকে বিজয়। এই যুদ্ধে খতম হয় ১২৪ জন পাকসেনা, ২৫ জন রেঞ্জার এবং ৮৫ জন রাজাকার। আত্মসমর্পণ করেন একজন পাকসেনা ও দুজন রাজাকার। শহিদ হন ৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ২১ জন মিত্রবাহিনীর সদস্য। এই ঐতিহাসিক যুদ্ধে তালিকাভুক্ত সাত শহীদ হচ্ছেন জামালপুরের সরিষাবাড়ির শওকত আলী, ময়মনসিংহের ফুলপুরের হযরত আলী, হালুয়াঘাটের আক্তার হোসেন, ময়মনসিংহ সদরের আলাউদ্দিন, শাহজাহান, শ্রী রঞ্জিত গুপ্ত এবং সিপাহী ওয়াজিউল্লাহ।
এই বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিবছর এই দিনে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হয় তেলিখালি যুদ্ধ দিবস। কিন্তু এ বছর করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সীমিত পরিসরে পালন করা হয় দিবসটি।
আজ সোমবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে তেলিখালিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, তেলিখালী যুদ্ধে বীর শহীদদের সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কবর জিয়ারত এর মধ্যদিয়ে দিবসটি পালন করা হয়। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হালুয়াঘাট ধোবাউড়া আসনের সাংসদ জুয়েল আরেং এমপি। এছাড়াও হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রেজাউল করিম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) বীর মুক্তিযোদ্ধা কবিরুল ইসলাম বেগ, সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মো. আব্দুর রশিদ, পৌর মেয়র খাইরুল আলম ভুঞা, ভুবনকুড়া ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ এম সুরুজ মিয়া, যুবলীগ নেতা মাসুদ করিম শান্ত, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমানউল্লাহ , মুক্তিযোদ্ধা আ: গণি , মুক্তিযোদ্ধা আ: রাজ্জাক আকন্দসহ শহীদ পরিবারের সদস্য, ময়মনসিংহ,নালিতাবাড়ী, ফুলপুর সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত বীর মুক্তিযোদ্ধা বৃন্দ এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।