বিজেপিতে বাড়ছে অসন্তোষ! শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠকে অনুপস্থিত একাধিক বিজেপি নেতা,উঠছে দলবদলের গুঞ্জন

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

6c7300e0e288

নিউজ ডেস্ক : রাজ্যে সদ্য শেষ হয়েছে বিধানসভা ভোট। আর সেই নির্বাচনে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের আশা ছিল জিতছেন তাঁরাই। কিন্তু নির্বাচনী ব্যাপক ভরাডুবির সম্মুখীন হতে হয় গেরুয়া শিবিরকে। ১০০ টি আসনেও জয় পাইনি বিজেপি। ৭৭ আসনে জয় পেয়েছে বিজেপি। স্বপ্ন ছিল বিধানসভায় শাসক দল হয়ে ওঠা কিন্তু বাস্তবে বিরোধী দল হয়েই থাকতে হচ্ছে বিজেপিকে।

বঙ্গ জয়ের লক্ষ্যে একাধিক সভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, যোগী আদিত্যনাথরা। অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে দিয়েও করানো হয় একাধিক রোড শো, সভা। টিকিট দেওয়া হয় টলিউডের অভিনেতা–অভিনেত্রীদের। অথচ তাঁদের মধ্যে অভিনেতা হিরণ চ্যাটার্জি ছাড়া জয় পায়নি কেউই। আর ময়না বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী তারকা ক্রিকেটার অশোক দিন্দা।আশা জাগিয়েও হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মতো জেলায় খাতায় খুলতে পারেনি বিজেপি। বিভিন্ন জেলায় আক্রান্ত হচ্ছেন বিজেপির কর্মীরা। দলের খারাপ পরিস্থিতিতে দলের পরবর্তী কর্মসূচী পরিকল্পনা করতে হেস্টিংসে দলের কার্যালয়ে দলের পদাধিকারীদের এবং দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতাদের বৈঠক ছিল। বৈঠকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ, শমীক ভট্টাচার্য, দলের সাধারণ সম্পাদক(সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী এবং সদ্য এরাজ্যের দায়িত্ব প্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা তরুণ চুঘ উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু বৈঠকে ডাকা হলেও আসেননি রাজীব ব্যানার্জি, ভারতী ঘোষ, লকেট চ্যাটার্জি, সব্যসাচী দত্তের মতো নেতারা।

প্রসঙ্গত, এই বৈঠকে বিজেপির পরাজিত প্রার্থীদের কাউকেই সেভাবে দেখা যায়নি। নীচুতলার বিজেপি কর্মীদের মতে পরাজিত বিজেপি প্রার্থীরা হেরে যাওয়ার পর থেকে দলের নেতাদের বা কর্মীদের ফোনও ধরছেন না। আদৌ তাঁরা বিজেপির হয়ে সক্রিয় রাজনীতি করবেন কিনা সে প্রশ্ন থাকলেই। ভোটের মুখে হাওড়া জেলার একাধিক হেভিওয়েট তৃণমূল নেতাকে দলবদল করিয়ে নিয়ে আসা হয় বিজেপিতে। অথচ রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব ব্যানার্জিও বিজেপির টিকিটে পেলেন না জয়। তাঁর নিজের হাতের তালুর মতো চেনা ডোমজুড়েই রাজীব ব্যানার্জিকে হারতে হয় প্রায় ৫০ হাজার ভোটে।
বিজেপির তরফ থেকে অবশ্য দলের মধ্যেকার অস্বস্তি ঢাকতে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির জন্য অনেকে আসেননি। শারীরিক অসুস্থতার জন্যও আসেননি কয়েকজন। দলের সঙ্গে সবার যোগাযোগ রয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় আমাদের কর্মীদের উপর সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল। আক্রান্ত কর্মীদের পাশে রয়েছেন বিজেপির নেতারা তাই এই বৈঠকে সবাই আসতে পারেননি।’

 

যে ডোমজুড় থেকে ২০১৬ বিধানসভা ভোটের মার্জিনে রেকর্ড তৈরি করেছিলেন রাজীব ব্যানার্জি। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া বৈশালী ডালমিয়া, হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র ডা: রথীন চক্রবর্তী, প্রবীর ঘোষাল সকলেই এবার হেরে যান তৃণমূলের কাছে। বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্তকেও হারতে হয়েছে একদা সতীর্থ তৃণমূলের সুজিত বসুর কাছে। আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারিও এবারের ভোটে পরাজিত হন তৃণমূলের কাছে। সাংসদ অর্জুন সিংয়ের গড়েও এবার খারাপ ফল করেছে বিজেপি। ভাটপাড়া আর জগদ্দল আসনে জয় পেয়েছে বিজেপি। অথচ ব্যারাকপুর, বীজপুর, খড়দহ, নোয়াপাড়া, নৈহাটিতে জয় পেয়েছে তৃণমূল। বিধানসভা ভোটের ধাক্কা সামলে বিজেপি আদৌ ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কিনা আপাতত সেই দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। দলবদলের জল্পনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই একাধিক বিজেপি নেতা এবং গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়া প্রাক্তন তৃণমূল নেতার মুখে শোনা গিয়েছে তৃণমূল প্রীতির কণ্ঠ এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর