সাইফুল্লা লস্কর : সেপ্টেম্বর মাসে প্রবল করোনার আতঙ্কের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হওয়া সংসদের জরুরী কালীন বাদল অধিবেশনে পাস হওয়া কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবিতে গত ২৬ শে নভেম্বর থেকে দিল্লির উপকণ্ঠে অবস্থান-বিক্ষোভ দেখিয়ে যাচ্ছেন লক্ষ লক্ষ কৃষক। বিরোধীরা দাবি করছেন দ্রুত সংসদের শীতকালীন অধিবেশন ডেকে কৃষি বিল নিয়ে আলাপ আলোচনা করতে। ঠিক সেই সময় কৃষক আন্দোলন নিয়ে চাপে থাকা কেন্দ্র সরকার জানিয়ে দিলো এবছরের শীতকালীন অধিবেশন স্থগিত করার কথা। গতকাল সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে লেখা এক চিঠিতে জানিয়েছেন এবারের শীতকালীন অধিবেশন করোনা আবহের কথা মাথায় রেখে রদ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দাবি করেছেন এ ব্যাপারে সমস্ত দলের সঙ্গে আলোচনা করে এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে কংগ্রেসের তরফ থেকে। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, সরকার সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। আরেক কংগ্রেস নেতা গোলাম নবী আজাদ বলেন, এই ব্যাপারে আমাদের কারও সঙ্গে কোনো রকম আলাপ আলোচনা করা হয়নি। অধীর রঞ্জন চৌধুরী জানিয়েছেন সরকার কৃষি বিল নিয়ে আলোচনা করতে ভয় পাচ্ছে সেজন্যই সংসদ অধিবেশন স্থগিত করেছে।
সংবিধান অনুযায়ী সংসদের দুই অধিবেশনের মধ্যে সর্বোচ্চ ছয় মাসের বিরতি থাকতে পারে। শীতকালীন অধিবেশন রদ হওয়ার পর পরবর্তী বাজেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে। যেখানে গত অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেপ্টেম্বর এ।
তবে প্রশ্ন উঠছে গতকাল থেকে শুরু হওয়া মহারাষ্ট্রের শীতকালীন অধিবেশন মাত্র দুইদিন করায় মহারাষ্ট্র সরকারের কঠোর সমালোচনা করা বিজেপি এখন কেন একই কারণে শীতকালীন অধিবেশন স্থগিত করছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন করোনা আবহের মধ্যে হায়দ্রাবাদের পৌরনির্বাচন, পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন সহ অন্যান্য নির্বাচনের প্রচারাভিযানে বিজেপি নেতৃত্ব কোন খামতি রাখেনি। নিট এর পরীক্ষা এর মধ্যেই আয়োজন করল কেন্দ্রীয় সরকার। পশ্চিমবঙ্গে লোকাল ট্রেন পর্যন্ত চালানোর অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সর্বোপরি সেপ্টেম্বর মাসে কৃষি বিল সহ ২৭ টি বিল পাস করানোর জন্য চরম করোনা শঙ্কার মাঝেই বাদল অধিবেশন আহ্বান করা হয়েছিল কেন্দ্র সরকারের তরফে। তাহলে এখন কেন শীতকালীন অধিবেশন পুরোপুরি স্থগিত করা হলো যখন করোনা পরিস্থিতি অনেকখানি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে এসেছে?