মাদ্রাসায় গেরুয়া আগ্রাসন! মুসলিম শিশুদের পড়ানো হবে গীতা, মহাভারত, রামায়ণ

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

Madrasa

নিউজ ডেস্ক : কেন্দ্রে মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে একের পর এক শিক্ষা স্বাস্থ্য সমস্ত ক্ষেত্রে চলছে গেরুয়া সন্ত্রাসীদের অপসংস্কৃতির আগ্রাসন। জোর করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে নিজেদের মতাদর্শগত বিষয় সমূহ। এবার গেরুয়া আগ্রাসনের শিকার মাদ্রাসাগুলো হতে চলেছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ভারতের ১০০ টি মাদরাসায় পড়ানো হবে বেদ গীতা রামায়ণ-মহাভারতের মতো হিন্দুদের ধর্মীয় গ্রন্থ সমূহ। আপাতত এই ১০০ টি মাদরাসায় চালু করা হলেও ধীরে ধীরে এই সংখ্যাটি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্য রয়েছে মোদি সরকারের। এখন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওপেন স্কুলিং এর অন্তর্গত ১০০ টি মাদ্রাসায় হিন্দু ধর্মীয় গ্রন্থ গুলি পড়ানো শুরু হবে। এই খবরের রীতিমতো চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের মাঝে। গেরুয়া আগ্রাসন ধীরে ধীরে গ্রাস করতে চলেছে ভারতের মুসলিমদের স্বতন্ত্র সংস্কৃতি শিক্ষা ব্যবস্থা এবং ধর্মীয় রীতিনীতি। ইতিমধ্যেই জোর করে ভারতের মুসলিমদের গেরুয়া সন্ত্রাসীরা চুরি করেছে তাদের উগ্রবাদী এবং সন্ত্রাসীদের স্লোগান জয় শ্রীরাম। এবার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মরেও গেরুয়া উগ্রবাদীদের চেতনা প্রবেশ করানোর জন্যই এই অপচেষ্টা কেন্দ্রের কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিজেপির সরকারের।

কেন্দ্রের নয়া শিক্ষানীতি মেনেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে খবর। NIOS-এর চেয়ারম্যান সরোজ শর্মা জানিয়েছেন, আপাতত ১০০টি মাদ্রাসায় তৃতীয়, পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যক্রমে থাকছে গীতা-রামায়ণ। ভবিষ্যতে ৫০০টি মাদ্রাসায় চালু হবে এই বিষয়ে পাঠদান। ভারতীয় সংস্কৃতির নামে ভিন্ন ধারার স্বতন্ত্র সংস্কৃতিগুলো ধ্বংস করার চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে একশ্রেণীর সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপণ্ণ গেরুয়া উগ্রবাদী।

বেদ, যোগ, রামায়ণ ও মহাভারতের মতো বিষয়ে পাঠ থাকবে। প্রসঙ্গত, ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ওপেন স্কুলিং’ একটি স্বয়ংশাসিত প্রতিষ্ঠান। যদিও শিক্ষামন্ত্রকের অধীনস্থ NIOS। মঙ্গলবার রাজধানী নয়াদিল্লিতে এই পাঠ্যক্রম উন্মোচন করেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিওয়াল।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের জুলাই মাসে প্রায় ৩৪ বছর পর বদল আসে নয়া জাতীয় শিক্ষানীতিতে (National Education Policy)। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা, শিক্ষাব্যবস্থার খোলনলচে বদলে ফেলা হল এই নয়া নীতিতে। এক সাংবাদিক সম্মেলন করে কেন্দ্রের তরফে এই পরিবর্তনের কথা ঘোষণা করা হয়। নয়া নীতিতে শিক্ষার অধিকারের আওতায় আনা হয়েছে ৩ থেকে ১৮ বছরের পড়ুয়াদের। পাশাপাশি বদল ঘটানো হয়েছে পরীক্ষা ব্যবস্থায়। এমনকী আমূল বদলে গিয়েছে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাও। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নাম বদলে হয়েছে শিক্ষামন্ত্রক। স্বাধীনতার পর থেকে এই নামেই পরিচিত ছিল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে গুরুত্বহীন দশম বা দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় পড়ুয়াদের মুখস্থ বিদ্যার বদলে হাতেকলমে শিক্ষায় জোর দেওয়া হবে। প্রতিবছরের বদলে তৃতীয়, পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পরীক্ষা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। দশম শ্রেণির পর কলা বিভাগ, বিজ্ঞান বিভাগ বা বাণিজ্য বিভাগের তফাৎ উঠে যাচ্ছে। পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়লেও, পাঠ্যক্রমে থাকতে পারে সংগীত। পদার্থবিদ্যা, রসায়ন নিয়ে পড়লেও, ফ্যাশন ডিজাইনিং পড়ার সুযোগ পাবে পড়ুয়ারা। যদিও বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, নয়া নীতিতে শিক্ষাব্যবস্থা কুক্ষিগত করেছে কেন্দ্র।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর