আবারও দুই মহিলা সাংবাদিকের উপর চড়াও ত্রিপুরা পুলিশ, ত্রিপুরা কাণ্ডে তথ্য দিতে নারাজ রাজ্যে

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

TRIPURA

এনবিটিভি ডেস্কঃ   আবারও ত্রিপুরা পুলিশ ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্য চড়াও দুজন সাংবাদিকের উপর। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক ঘটনার ছাপ দেখা মেলে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে। অক্টোবরে হিন্দুত্ববাদী  বাহিনী হামলা চালায় ত্রিপুরার সংখ্যালঘু সম্প্রদায় মুসলিমদের উপরে। অনেক মসজিদ,বসতি ঘর ও দোকান পুড়িয়ে দেয় এই হিন্দুত্ববাদী বাহিনী।

কয়েক দিন পূর্বে এই ঘটনাকে চিরুনি তল্লাসির জন্য দিল্লী থেকে কিছু অ্যাডভোকেট যৌথ ভাবে  ত্রিপুরাতে যায়। তারপরেই দুজন অ্যাডভোকেটকে ইউএপিএ মামলা চাপিয়ে দেয় ।

ঠিক সেই একই ভাবে দুজন মহিলা সাংবাদিক ত্রিপুরায় হামলার ঘটনার তথ্য অনুসন্ধানের জন্য যান। এই দুই সাংবাদিকের উপর চড়াও হয় ত্রিপুরা পুলিশ ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। প্রথমে গ্রেফতার করে পুলিশ। অনেক হেনস্থার পর দুজন সাংবাদিককে  ৭৫ হাজার টাকার বন্ডে জামিন দেওয়া হয়

এইচডব্লিউ নিউজ নেটওয়ার্কের দুজন  সাংবাদিক সমৃদ্ধি সাকুনিয়া স্বর্ণা ঝা ত্রিপুরার কুমারঘাট থানায় তাদের বিরুদ্ধে ১৪ নভেম্বরে একটি এফআইআর করা হয়। পরে ত্রিপুরা সহিংসতার প্রতিবেদনের অভিযোগে গ্রেপ্তারও করে পুলিশ। যদিও পরবর্তীতে তাদের জামিন দেওয়া হয়েছে স্থানীয় আদালতের মাধ্যমে।

 

অক্টোবর থেকে এই অঞ্চলে যে সহিংসতা ঘটনা ছড়িয়ে পড়েছিল  দুই সাংবাদিক ঘটনার স্থল থেকে  রিপোর্ট করেন । এই ঘটনায় ঘর ভাংচুর এবং মসজিদে হামলার রিপোর্ট সহ নানান খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ করে।  

 

সাংবাদিকদের আইনজীবী পিযুষ বিশ্বাস দ্য ওয়্যার সংবাদ মাধ্যমকে জানায়,দুই সাংবাদিককে প্রথমে ত্রিপুরা পুলিশ রাজ্য ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলপুনরায়  ত্রিপুরার পুলিশদের নির্দেশে আসামে আটক করা হয় । রবিবার গভীর রাতে তাদের ত্রিপুরায় ফিরিয়ে নিয়ে গ্রেফতার করা হয়। সাকুনিয়া এবং ঝাকে সোমবার ত্রিপুরার উদয়পুর মহকুমার গোমতি জেলা আদালতে হাজির করা হয় এবং জামিন মঞ্জুর করা হয়

 

আইনজীবী বিশ্বাস আরও জানান,দুজনকে ৭৫ হাজার টাকার বন্ডে জামিন দেওয়া হয়েছে এবং আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার কাকরাবন থানায় হাজির হতে হবে। সাংবাদিকদের এখনও রাজ্য ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হবে না বলে জানা গেছে।

 

পুলিশ মহাপরিচালক, আগরতলার দ্বারা জারি করা একটি প্রেস বিবৃতিতে, পুলিশ বলে, “আগরতলা আসার পরিবর্তে, দুই সাংবাদিক আসামের দিকে পালিয়ে যায়।বিবৃতিতে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিবরণও দেওয়া হয়েছে। এতে অভিযোগ করা হয়েছে যে সাংবাদিকরা সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করছিল এবং অপরাধী ষড়যন্ত্রের জন্য নথি বানোয়াট, গোপন করা।

 

ত্রিপুরার এক পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ওয়্যার সংবাদ মাধ্যমকে জানায়, “চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে অনুমতি নেওয়ার পরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর উদয়পুর মহকুমা আদালতে হাজির করা হবে।”

 

রবিবার তার আটকের আগে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে, সাকুনিয়াকে তার আটকের বিবরণ দিতে দেখা যায়। তিনি বলেন,”আমাদের আটকের কোনো আদেশ বা এফআইআর দেওয়া হচ্ছে না, আদেশের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে আমাদের কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি, কোনো আদেশ ছাড়াই আমাদের ১০০ কিলোমিটার দূরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন,”আমরা অসহায় বোধ করছি, কোনও আইনশৃঙ্খলা অনুসরণ করা হচ্ছে না, দয়া করে আমাদের আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করুন।”

সাংবাদিক সাকুনিয়া বলেন,আমাদের ভয় দেখানো হচ্ছে এবং হুমকি দেওয়া হচ্ছে কারণ আমরা মাটিতে যা ঘটেছে তা তুলে ধরছি। সাংবাদিকতা কি অপরাধ? আমার কাজ করার জন্য এবং সহিংসতার নথিভুক্ত করার জন্য আমাকে ভয় দেখানো হচ্ছে।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর