গত রবিবার অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুর শহরে ইঞ্জিনিয়ারিং-এর এক তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়। সিসিটিভিতে ধরা পড়ে সেই ভয়াবহ ঘটনা। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরে রাজ্য জুড়ে হইচই শুরু হয়েছে। নিহত ছাত্রীর দেহটি রাখা আছে সরকারি হাসপাতালে। সেখানে গিয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এম সুচিত্রা। তিনিও বলেছেন, ‘সাংঘাতিক ঘটনা’। রবিবার গভীর রাতে অন্ধ্র পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল ডি ডি সাওয়াং জানান, খুনি ধরা পড়েছে। পুলিশের ডিজি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘স্থানীয় মানুষ ওই খুনের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র দিয়েছেন। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজেও খুনি সম্পর্কে অনেক কিছু জানা গিয়েছে।’
অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস জগনমোহন রেড্ডি ঘোষণা করেছেন, মৃত ছাত্রীর পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। স্থানীয় প্রশাসনকে তিনি বলেছেন, তারা যেন ওই পরিবারের দেখাশোনা করে। তেলুগু দেশমের সাধারণ সম্পাদক তথা বিধান পরিষদের সদস্য নরলোকেশ বলেন, স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী যখন দাবি করছিলেন, তাঁর আমলে মহিলারা নিরাপদে আছেন, তখনই ওই দলিত ছাত্রী খুন হন। জন সেনার প্রধান কে পবন কল্যাণ বলেন, ‘ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীর মৃত্যু দুঃখজনক। সম্প্রতি রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় মহিলারা আক্রান্ত হয়েছেন। বোঝা যাচ্ছে, রাজ্য সরকার অপরাধ কমাতে ব্যর্থ হয়েছে।’ তাঁর মতে, শুধু আইন করে অপরাধ কমানো যায় না। অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে সরকারের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ছাত্রী কাকানি রোড ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এমন সময় বাইক আরোহী এক যুবকের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। যুবকটি তার বাইকে ছাত্রীটিকে উঠতে বলে। মেয়েটি উঠতে অস্বীকার করে। তখন তর্কাতর্কি শুরু হয়। যুবকটি একসময় ছুরি বার করে মেয়েটির ঘাড়ে ও পেটে একের পর এক কোপ মারতে থাকে। তা দেখে দৌড়ে আসে স্থানীয় মানুষ। রক্তাক্ত ওই ছাত্রীকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মেয়েটি হাসপাতালে মারা যায়। গুন্টুর পুলিশের আরবান সুপারিনটেনডেন্ট আরিফ হাফিজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কঠোর আইন থাকা সত্ত্বেও মানসিক বিকারগ্রস্তদের আটকানো যাচ্ছে না। তাদের চরম শাস্তি দেওয়া উচিত।’ তিনি জানান, মৃতের বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কেন তাকে ছুরি মারা হয়েছিল, তার কারণ জানার চেষ্টা হচ্ছে।