ইসলামী বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নতিতে নব যুগের সূচনা করবে তুরস্ক, ইরান ও পাকিস্তানের মেগা ট্রেন প্রজেক্ট

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

Screenshot_2020-12-26-22-58-48-618_com.google.android.youtube

নিউজ ডেস্ক : ইসলামী বিশ্বের অভিন্ন মেরুতে অবস্থিত পরাশক্তি তুরস্ক, উদীয়মান শক্তি ইরান এবং বৃহৎ সামরিক এবং পারমাণবিক শক্তি পাকিস্তান। সৌদি আরব, আরব আমিরাত সহ আরব দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানরা যখন ইসলাম বিরোধী শক্তিগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে তাদের ক্ষমতা রক্ষার স্বার্থে তখন তিন গণতান্ত্রিক ইসলামী দেশ নিজেদের মধ্যেকার বানিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করতে এক মেগা প্রজেক্টের সূচনা করতে চলেছে। এই প্রজেক্টের নাম তুরস্ক ইরান পাকিস্তান মেগা ট্রেন প্রজেক্ট। তুরস্কের বানিজ্যিক রাজধানী ইস্তানবুল থেকে শুরু করে একটি দীর্ঘ রেল লাইন ইরানের মধ্যে থেকে হয়ে পৌঁছাবে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে।এটির দৈর্ঘ্য হবে সাড়ে ৬ হাজার কিলোমিটারের বেশি।

এই প্রকল্পের ফলে বৃদ্ধি পাবে এই তিনটি দেশের মধ্যেকার বানিজ্য। বিশেষভাবে উপকৃত হবে ইরান এবং পাকিস্তান। আন্তজার্তিক চাপের মুখে আন্তর্জাতিক বানিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ইরানের। এই প্রকল্প তাদের বাড়তি সুবিধা দিতে পারবে দুই বৃহৎ মুসলিম দেশের বাজার দখল করতে। ইরানের তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস সহজে পৌঁছাতে পারবে তুরস্কে এবং পাকিস্তানে। মুসলিম বিশ্বের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থাপনা ইরানে অবস্থিত হওয়ায় তুরস্ক এবং পাকিস্তান থেকে বহু পর্যটক ইরান সফর করেন প্রতিবছর। এই প্রকল্পে তাদের সংখ্যাও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

আবার পাকিস্তান এর ফলে তাদের বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়াতে পারবে ইরান এবং তুরস্কের সঙ্গে। উল্লেখ্য বর্তমানে ইরান এবং তুরস্কের সঙ্গে পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ যথাক্রমে ৩০০ বিলিয়ন ডলার ও ৭০০ বিলিয়ন ডলার যা প্রত্যাশার তুলনায় অনেক কম। সেখানে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যেকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার। তাই পাকিস্তান এই দুই মুসলিম দেশের সঙ্গে যে সুসম্পর্ক তাদের আছে তাকে বানিজ্যিক খাতে ও বিস্তৃত করতে পারবে। আবার এর মাধ্যমে ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে ও বানিজ্য করতে অনেক সুবিধা হবে পাকিস্তানের। কারণ এখন পাকিস্তান থেকে তুরস্ক এবং ইউরোপের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের অন্যতম মূল অন্তরায় হলো দীর্ঘ সামুদ্রিক দূরত্ব। পাকিস্তান থেকে কোনো পণ্য ইউরোপের বাজারে পৌঁছায় আরব সাগর থেকে লোহিত সাগরের মধ্যে থেকে গিয়ে সুয়েজ খাল পার হয়ে ভূমধ্যসাগর অতিক্রম করার পর। উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় প্রয়োজনে পাকিস্তান তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি করতে পারবে আজারবাইজান থেকেও।

মুসলিম বিশ্বের নয়া পরাশক্তি তুরস্কের নিজেদের বাজার সম্প্রসারণে অনেক সুবিধা হতে পারে শুধু ইরান পাকিস্তানে নয় বরং মধ্য এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোতে। যেমন তুর্কমেনিস্তান, তাজিকিস্তান, কাজাখস্তান, কির্ঘিজস্তানে দেশগুলোতেও। তার বাইরে আফগানিস্তান এবং আজারবাইজান ও তাদের পণ্যের বাজার হবে। এছাড়া সম্ভাবনা আছে ভবিষ্যতে ৬২ বিলিয়ন ডলারের চীন পাকিস্তানের সিপ্যাকের সঙ্গেও এটি যুক্ত হতে পারে। কারণ এই তিন দেশে আমেরিকা বিরোধী এবং চীনের মিত্র হিসেবে পরিচিত। বানিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পেলে জোরদার হবে কূটনৈতিক সম্পর্ক। ফলে সৌদি আরব ছাড়াই মুসলিম বিশ্বে নতুন ব্লক তৈরীর স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দেখবে।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর