উচ্ছেদের চার মাস পরেও সরকারের ত্রাণের হদিশ নাই, অভিযোগ আসামের বাস্তুচ্যুত পরিবারের  

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

আসামের মৃত মইনুল হকের পরিবার।
আসামের মৃত মইনুল হকের পরিবার।

এনবিটিভি ডেস্কঃ  বিশাল এলাকা জুড়ে মন্দির তৈরি হবে, সেজন্য আসামের শতাধিক পরিবারকে উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয় আসাম সরকার। আসামে বিজেপি স্বাসিত রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মার নির্দেশেই গত ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এমন তাণ্ডব চলে। এদিনে ২৮ বছর বয়সী মইনুল হককে গুলি করে হত্যা করে হামলাকারীরা। এরপরে সরকারী ক্যামেরা ম্যান মৃত মইনুলের দেহে লাফানোর চিত্র সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এমনও হাজারও সংখ্যালঘু পরিবারকের উচ্ছেদের মুখে পড়তে হয়। এতো দিনের পরেও সরকারের কাছ থেকে কোনো ত্রাণ পাচ্ছেন না, অভিযোগ ভুক্তভোগী বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলির। তাদের  আরও অভিযোগ, মৃত ব্যাক্তিদের এখনও পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এখনও পায়নি।

উল্লেখ্য, দৈনিক মজুরি শ্রমিক মইনুল হক আসামের দারাং জেলার সিপাঝার ব্লকের ব্রহ্মপুত্র নদীর মাঝখানে একটি বালির বৃহত্তর ধলপুর এলাকায় আসাম সরকার কর্তৃক পরিচালিত উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছিলেন। তার বাড়ি ভাঙা হচ্ছে বলে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন মইনুল হক। পুরানো টিন এবং বাঁশের অবশিষ্টাংশ সংগ্রহ করে তৈরি করেছিল বাড়ি। মাত্র এক কিলোমিটার দূরে একটি ছোট অস্থায়ী আশ্রয় তৈরি করেছিলন তারা। যদিও প্রায়শই প্রবল বাতাসে ক্ষতিগ্রস্ত হত তাদের এই সামান্য আশ্রয়স্থল।

মৃত মইনুল হকের স্ত্রী মমতাজ বেগম এবং তাদের তিন সন্তান সারা শীতকাল টিনের তৈরি ঘরে থাকেন। মমতাজ বেগম বলেন, এই শীতকালে সব শিশুরই জ্বর হয়েছে, কিন্তু টাকা না থাকায় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে পারেননি। মইনুল হক পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী সদস্য ছিলেন। তাদের সামান্য জমি ছিল যেটি তারা চাষের জন্য ব্যবহার করে আসছিল। কিন্তু আসাম সরকারের উচ্ছেদের পর তারা সেটাও হারিয়ে ফেলেছে।

মমতাজ বেগম অভিযোগ করে বলেন, “আমাদের পরিবার এখন এনজিও দের দেওয়া ত্রাণ সামগ্রীর উপর নির্ভর করতে হয়। সরকারের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো আর্থিক সহায়তা করা হয়নি।”

মইনুল হকের ছোট ভাই আইনুদ্দিন বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মইনুল হকের নাম ও বয়সের ত্রুটি থাকায় পোস্টমর্টেম রিপোর্ট দিতে অস্বীকৃতি জানায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের সিপাঝার থানায় নামের ত্রুটির বিষয়ে লিখিত আকারে দিতে বলেছেন। অন্যদিকে পুলিশ আমাদের জিজ্ঞাসা করেছিল যে, আমরা রিপোর্টটি নিয়ে কী করতে চাই, ‘পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছেন?’ এমনও প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে আমাদের।”

মমতাজ বেগম সংবাদমাধ্যমকে আক্ষেপ জানিয়ে বলেন,” আমার স্বামীর জীবন কেড়ে নিয়েছে, অন্যদিকে আমাদের বাসভূমি টুকুও কেড়ে নিয়েছে। এখন আমার সন্তানদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করেছে। আমার এর বিচার চাই।”

তথ্য সূত্র- স্ক্রোল

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর