রাজ্যে স্কুল খোলার দাবী তুলে, নাজিমুদ্দীনের হত্যার প্রতিবাদে ও আলিয়ার অবস্থান বিক্ষোভের সমর্থনে মুর্শিদাবাদে বিক্ষোভ মিছিল

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

মুর্শিদাবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল।
মুর্শিদাবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল।

এনবিটিভি, মুর্শিদাবাদঃ  শনিবার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান বিক্ষোভের সমর্থনে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবীতে ও নাজিমুদ্দীনকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল সংঘটিত হল। এদিনের বিক্ষোভ মিছিলটি মুর্শিদাবাদের হোসেন নগর দারুল উলুম সিনিয়র মাদ্রাসা সন্নিকটে।

এদিনের ২০০ অধিক সংখ্যক ছাত্র নিয়ে এই মিছিল শুরু হয় হোসেন নগর দারুল উলুম সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে। বিক্ষোভ মিছিলটি ছকন্নগর পর্যন্ত যায়, তারপর সেখান থেকে ফিরে বিক্ষোভ মিছিলটি মাদ্রাসায় শেষ হয়।

আলিয়া বিশ্ব বিদ্যালয়ের চলমান অবস্থান বিক্ষোভকে উল্লেখ করে উক্ত মাদ্রাসার বর্তমান ছাত্র মুর্শিদ আলম বলেন, “আজকে দীর্ঘদিন ধরে চলছে আলিয়ার আন্দোলন তাদের দাবী দাওয়া গুলো নায্য তারপরেও সংখ্যালঘু মন্ত্রী, দপ্তরের কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ তাদের দাবী পূরণ বা অবস্থান মঞ্চে যেতেই অনিচ্ছুক। আমাদের দাবী অবিলম্বে মন্ত্রী গিয়ে অবস্থানকারীদের সাথে কথা বলুক। আর যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে আমরা আলীয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করে বৃহত্তর আন্দোলনের রুপ দেবো।”

 এদিনের মিছিলে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি সাজিদুর রহমান, আলিয়ার ছাত্রনেতা লুৎফুল হক। বেলডাঙা মাদ্রাসার ছাত্র সোয়াইল হক, আখের আলী, হাসান ও দেলোয়ার , জামীল, জাকির,আব্দুল্লাহ, মেহেদী হাসান সহ আরও অনেকেই।

এদিন বিক্ষোভ মিছিলের উদ্দেশ্য গুলি উল্লেখ করে সাজিদুর রহমান জানান যে, “এই বিক্ষোভ মূলত তিনটি দাবিকে সামনে রেখে। প্রথমত, আলিয়ার আন্দোলনের সমর্থন। দ্বিতীয়, নাজিমুদ্দিন হত্যার প্রতিবাদে। তৃতীয়, স্বাস্থ্যবিধি নেমে ৫০ শতাংশ ছাত্র নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হোক।

আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান অবস্থান বিক্ষোভের কথা উল্লেখ করে সাজিদুর রহামান জোর দিয়ে বলেন, “আমাদের আন্দোলনের ১০০ দিনের মাথায় আমরা আমরণ অনশনের সিদ্ধান্ত নিতে চলেছি।”

 সাজিদুর রহমান আরো বলেন, “রাজ্যে সব কিছু ৫০ শতাংশ নিয়ে খোলা হলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ সত্যি অবাক লাগছে। করোনার প্রকোপে মানুষের জীবন যতটা বিপর্যস্ত হয়েছে, তার থেকে কোন অংশে কম ক্ষতি করেনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গৃহীত সরকারের সিদ্ধান্ত। দীর্ঘকাল ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা ব্যাপক ভাবে পিছিয়ে পড়েছে। শিক্ষার মান কমে গিয়েছে অনেকটাই। বিশেষত প্রান্তিক জেলার পড়ুয়ারা অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে নেটওয়ার্কের সমস্যা কিংবা আর্থিক সংকটের কারণে। অনেক ছাত্রীকে পড়াশোনার পাঠ তুলে দিয়ে বসানো হয়েছে বিয়ের পিঁড়িতে। অনলাইন পঠন পাঠন এক প্রকার ধ্বংস করেছে প্রযুক্তিগত ভাবে পিছিয়ে থাকা জেলার মেধাবী পড়ুয়াদের।”

স্কুল খোলার দাবীনিয়ে বিক্ষোভ মিছিল থেকে জানানো হয়, “যেখানে অফিস আদালত, রাজনৈতিক মিটিং-মিছিল, ধর্মীয় জমায়েত, রেস্তোরা সমস্তই বহাল তবিয়তে চলছে সেখানে দেশের ভবিষ্যত তৈরির কারখানা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা হচ্ছে কেনো? আমরা পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়ান এর পক্ষ থেকে দাবি জানাচ্ছি যে, অবিলম্বে সমস্ত পড়ুয়াদের ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করে ৫০% ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হোক…।

হোসেন নগর দারুল উলুম সিনিয়র মাদ্রাসা প্রাক্তন ছাত্র ও আলিয়ার ছাত্রনেতা  লুৎফুল হক জানান, “আজ আমরা বিগত ৯৭ দিন ধরে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছি কিন্তু সংখ্যালঘু দপ্তর ও সংখ্যালঘু মন্ত্রী মহাশয়ের কাছ থেকে কোনো সুরাহা মেলেনি।”

এদিনের বিক্ষোভ মিছিলে শতাধিক শিক্ষার্থীর ভিড় চোখে পড়ে। সমবেত শিক্ষার্থী জাতীয় সংগীত পাঠের মাধ্যমে এই মিছিল শেষ হয়।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর