স্কুল পরিচালন সমিতির পদে নাম সুপারিশ করে বিতর্কে তৃণমূল নেতা প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

Screenshot 2022-07-17 151728

নজরুল মন্ডল, বাকুড়াঃ ফের শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ প্রকাশ্যে। এবার নিজের পছন্দ মতো লোকেদের স্কুল পরিচালন সমিতির গুরুত্বপূর্ণ পদে নাম সুপারিশ করে বিতর্কে জড়ালেন বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান, কোতুলপুরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা। বিধায়ক হিসেবে প্যাড ও সিল ব্যবহার করে কোতুলপুর ও জয়পুরের স্কুল গুলিতে এই সুপারিশ করেছেন যা নিয়ে তাঁর দলের লোকেরাই শ্যামল সাঁতরার বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন, পাশাপাশি নিজের গোষ্ঠীর লোকেদের নিয়োগের সুপারিশ করেছেন বলেও অভিযোগ। এই ঘটনার প্রতিবাদে সিহাস আর.জি হাই স্কুলে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন অভিভাবকদের একাংশ। তাঁদের দাবি একজন প্রাক্তন বিধায়ক স্কুল পরিচালন সমিতির সদস্য-পদাধিকারিদের নাম সুপারিশ করতে পারেন না। শুধুমাত্র ‘লবিবাজি’ করতেই নিয়মবহির্ভূতভাবে তিনি ঐ কাজ করেছেন বলে অভিযোগ।

জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান, প্রাক্তন বিধায়ক, প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরার ঐ ‘সুপারিশ’ তালিকায়  ‘সদস্য’ হিসেবে তাঁর নিজের দাদার নাম যেমন রয়েছে তেমনি অভিভাবক নন অথচ নিজের ঘনিষ্ট পরিচিতদের নামও ঐ তালিকায় রয়েছে বলে অভিযোগ।

নাম সুপারিশ করছেন তার চিত্র

জয়পুরের তৃণমূল ব্লক কমিটির সদস্য হরিসাধন দে সরাসরি শ্যামল সাঁতরার দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে বলেন, ‘ওনার দূর্ণীতি, দূর্ব্যবহার আর জনসংযোগে’র অভাবে কোতুলপুর বিধানসভা কেন্দ্র আজ আমাদের হাতছাড়া। প্রাক্তন বিধায়ক হিসেবে সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূতভাবে যে কাজ তিনি করেছেন জয়পুর-কোতুলপুরের মানুষ তা মেনে নেবেনা বলে তিনি দাবি করেন।

কোতুলপুর তিন নম্বর বিজেপি মন্ডল সভাপতি ঝন্টু মল্লিক বলেন প্রাক্তন বিধায়ক কি করে স্কুল পরিচালন কমিটির পদাধিকারীদের নাম সুপারিশ করতে পারেন প্রশ্ন তুলে বলেন, অবিলম্বে অভিভাবকদের সহমতের ভিত্তিতে কমিটি তৈরী হোক। প্রয়োজনে ভোট করার দাবিও জানান তিনি।

নবকুমার রায় নামে এক অভিভাবক বলেন, সম্পূর্ণ অবৈধ কাজকে বৈধ বলে চালানোর চেষ্টা হলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাবো। প্রাথমিক পর্যায়ে ঐ প্রাক্তন বিধায়কের সুপারিশ বাতিলের দাবি সিহাস আর.জি হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে জানিয়ে এসেছেন বলে তিনি জানান।

এই ইস্যুতে শ্যামল সাঁতরার পাশে নেই তাঁর দল। কোতুলপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি সমীর বাগ বলেন, বিষয়টা শুনেছি। ব্লক সভাপতি হিসেবে আমাকে বা অঞ্চল সভাপতিদেরও না জানিয়ে শ্যামল সাঁতরা ঐ কাজ করেছেন। এভাবে চলতে থাকলে সংগঠন দূর্বল হয়ে পড়ছে। এই ‘বেআইনী’ কাজের বিষয়টি তিনি দলের উচ্চ নেতৃত্বকে জানাবেন বলে জানান।

এবিষয়ে শ্যামল সাঁতরাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এক্স এম.এল.এ হিসেবে প্যাড ব্যবহার করেছি।’ তবে ‘ক্ল্যারিক্যাল মিস্টেক’ হতে পারে। এলাকার বেশ কিছু স্কুলে কমিটি ছিলনা, ফলে স্কুল পরিচালনা ও টাকা পয়সা ব্যবহারে অসুবিধা হচ্ছিল। এই অবস্থায় প্রধান শিক্ষক ও জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধে সুপারিশ করেছিলাম, সেই পরিপ্রেক্ষিতেই স্কুল শিক্ষা দপ্তর অনুমোদন দিয়েছে। আরো অনেকের মতো তিনিও বিধায়কের প্যাডে ‘এক্স’ লিখে ব্যবহার করেন বলে জানান।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর