ভারতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা চীনের মোট আক্রান্তের থেকে ৩ গুণেরও বেশি!গতকাল আক্রান্ত ৩,১৬০০০

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

photo

নিউজ ডেস্ক : ভারতের ক্ষমতাসীন মোদি সরকার করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে করিনা বিধি যথাযথ ভাবে বলবৎ করেনি। বন্ধ করেনি তাদের রাজনৈতিক প্রচারাভিযান। ধর্মীয় গোঁড়ামির কারণে বন্ধ করেনি কুম্ভ মেলায় লক্ষাধিক মানুষের অনিয়ন্ত্রিত জমায়েত। যে চীনের সঙ্গে বর্তমানে মোদি ভক্ত শিবির সব ব্যাপারে পাল্লা দেওয়ার কথা বলে করোনা মোকাবিলায় সেই চীনের কাছে নির্লজ্জ হার জুটেছে মোদি সরকারের ব্যর্থ নীতির সৌজন্যে। চীনে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে করণা ভাইরাসের উৎপত্তি হলেও সেই চীনে সর্বসাকুল্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯০ হাজার যেখানে ভারতবর্ষে বর্তমানে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লক্ষের বেশি। মোদি আন্তর্জাতিক স্তরে নিজের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য দেশের মানুষকে বঞ্চিত করে অধিকাংশ করোনা ভ্যাকসিন বিদেশে রপ্তানি করেছেন বলে অভিযোগ একশ্রেণীর বিশেষজ্ঞদের। আবার দেশের মধ্যে বিভিন্ন রাজ্য গুলির মধ্যে অসম বন্টন এর অভিযোগ উঠেছে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে। এক্ষেত্রে সুবিধা এবং অগ্রাধিকার পেয়েছে বিজেপি শাসিত রাজ্য গুলি। রাজ্যগুলিকে অতিরিক্ত দামে করণা ভ্যাকসিন বিক্রির চেষ্টা চালাচ্ছে মোদি সরকার।

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড হয়েছে। বুধবার (২১ এপ্রিল) সেখানে বিশ্বের অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে প্রায় ৩ লাখ ১৬ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর ভারতে এই প্রথম দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ছাড়িয়ে গেল। টাইমস অব ইন্ডিয়ার তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে ৩ লাখ ১৫ হাজার ৯২৫ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। যা বিশ্বের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ। এর আগে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ৭ হাজার ৫৮১ জন আক্রান্ত হয়েছিল। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় ভারত সেটাকেও ছাড়িয়ে গেল।

গত ৪ এপ্রিল ভারতে একদিনে আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ। মাত্র ১৭ দিনের মাথায় আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে ৩ লাখ ছাড়িয়ে গেল। দৈনিক আক্রান্তের হার বেড়েছে ৬.৭৬ শতাংশ গতিতে। যা যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে চারগুণ বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে মারা গেছে ২ হাজার ১০২ জন। তাতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৬৭২ জন। আর আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ৫৯ লাখ ২৪ হাজার ৮০৬ জন। ভারত বাদে এ পর্যন্ত শুধু যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক আক্রান্ত লাখ ছাড়িয়েছে। তবে ভারতে এখন যে হারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তার গতি যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অনেক বেশি। যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ভারতে এমন পরিস্থিতি চলমান থাকলে যুক্তরাষ্ট্রও পেছনে পড়ে যাবে।

 

বর্তমানে ভারতে করোনার প্রকোপে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এমনকি গত তিন দিন ভারতে করোনা নমুনা পরীক্ষায় আক্রান্তের হার ছিল ১৯ দশমিক ২ শতাংশ। এটি ইঙ্গিত দিচ্ছে, ভারতে করোনার এই প্রকোপ শেষ হওয়া এখনো অনেক দূরে।

 

করোনায় প্রাণহানিতেও শীর্ষে রয়েছে ভারতের সবেচেয়ে ধনী রাজ্য মহারাষ্ট্র। গতকাল রাজ্যটিতে রেকর্ড সর্বাধিক ৫৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যান্য রাজ্যগুলোতেও মৃত্যুর সংখ্যা অতি দ্রুত হারে বাড়ছে। দ্বিতীয় সর্বাধিক ২৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজধানী অঞ্চল দিল্লিতে।
এরপর গতদিন যথাক্রমে ছত্তিশগড়ে ১৯৩, গুজরাটে ১২৫, কর্নাটকে ১১৬, মধ্যপ্রদেশে ৭৫, পাঞ্জাবে ৬৯, ঝাড়খণ্ডে ৬২, রাজস্থানে ৬২, পশ্চিমবঙ্গে ৫৮ এবং তামিলনাডুতে ৫৩ জন কোভিড-১৯ রোগীর প্রাণহানি হয়েছে। করোনা ভাইরাসের প্রকোপ কমাতে ইতিমধ্যেই লকডাউন জারি করা হয়েছে মহারাষ্ট্র, রাজস্থান সহ বেশকিছু রাজ্যে। এদিকে মোদি সরকার মহারাষ্ট্রকে করোনা ভ্যাকসিন, অক্সিজেন এবং অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রী প্রদানের ক্ষেত্রে বঞ্চনা করায় বিদেশ থেকে আমদানি করতে যাচ্ছে রাজ্যটি।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর