কর্ণাটকের ‘মুসকান’এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

কর্ণাটক হিজাব বিতর্ক।
কর্ণাটক হিজাব বিতর্ক।

এনবিটিভি ডেস্কঃ কর্ণাটকের মান্ডা জেলার কমার্সের ছাত্রী মুসকান খানকে ঘিরে থাকা একদল হিন্দুত্ববাদী যুবক তাকে কলেজের মধ্যে ঘিরে ফেলে। তাদের সম্মুখে ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি দিয়ে বাহাদুরের মতো কলেজের মধ্যে প্রবেশ করে। এই প্রতিবাদের ভিডিও এখন দেশ তথা সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।

এদিকে মান্ডা জেলার হিন্দুত্ববাদী ‘নরেন্দ্র মোদী চিন্তা মঞ্চ’ সংগঠন, জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দের বিরুদ্ধে মান্ডা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে যে, “ছাত্রীটি হিজাব নিয়ে প্রতিবাদের সময় আল্লাহু আকবর স্লোগান তুলেছিল। তাকে ৫ লক্ষ টাকা নগদ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে, এটা সাম্প্রদায়িকতা উস্কানি ছাড়া কিছুই নয়।”

উল্লেখ্য, কর্ণাটকের মান্ডা জেলার পিইএস কলেজের কমার্সের ছাত্রী মুসকান খান বোরকা পরার জন্য কলেজ প্রাঙ্গনে ভিড়ের মধ্যে হেনস্থা করা হয়। এককভাবে তিনি ভিড়ের মুখোমুখি হন। তোলেন এমনকি অনেক শিক্ষার্থী তাকে তাড়া করে আসে ও ‘জয় শ্রী রামে’র স্লোগান দিতে থাকে পাল্টা মুসকান ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দেয়। মুসকানের এই ভিডিওটি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।

মুসকানের সাহসের প্রশংসা করে জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দ ছাত্রীটিকে তার অধিকারের রুখে দাঁড়ানোর জন্য ৫ লক্ষ টাকা নগদ পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। ঘোষণা মতো মুসকানের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন কর্ণাটক জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দের প্রতিনিধি দল। ছাত্রীটির হাতে নগদ পাঁচ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেয়।

বুধবার হিন্দুত্ববাদী মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক সি.টি. মঞ্জুনাথ অভিযোগ করে বলেন, “কয়েকটি সংগঠন এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের অশান্তি সৃষ্টির জন্য নগদ পুরস্কার ঘোষণা করা একটি উদ্বেগজনক বিষয়। এই সংস্থার আর্থিক লেনদেন যাচাই বাছাই করতে হবে। আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। নগদ পুরস্কার ঘোষণার এই কাজটি মৌলবাদ এবং ধর্মীয় গোঁড়ামিকে উৎসাহিত করে।”

 মুসকান তাঁর সেদিনের অভিজ্ঞতা বলেন যে, “আমাকে কলেজের গেটে একদল ছাত্র বাধা দিচ্ছিল। তারা আমাকে বোরকা ছাড়া কলেজে প্রবেশ করতে বলে, অন্যথায় আমাকে বাড়ি ফিরে যেতে বলে। আমি তাদের কথা শুনিনি।”  

 ছাত্রীটি আরও বলেন, “ঐ ভিড়ের মধ্যে আমার সহপাঠীরাও কিছু ছিল। তবে, বেশীর ভাগই আমাদের কলেজের শিক্ষার্থী ছিল না। আমি কোনো ভয় ছাড়াই ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দিয়েছি। আমি আদালতের রায়ের জন্য অপেক্ষা করছি। আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে চলব।”

মুসকান আরও জানায়, সেই দিন কলেজ কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষক তাকে সমর্থন করেছে। প্রত্যেক ধর্মের তাদের সংস্কৃতি অনুসরণ করার স্বাধীনতা রয়েছে। মুসলিম শিক্ষার্থী তাদের সংস্কৃতি অনুসরণ করবে।

এদিকে কোর্টের রায়ের জন্য প্রত্যেকই তাকিয়ে রয়েছে আদালতের দিকে। কি হবে হিজাব বিতর্কের রায়। তা এখন সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তবে কর্ণাটকের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য আগামী সোমবার থেকে স্কুল খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যে সরকার।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর