বাবরির পথে বারাণসীর জ্ঞানভাপী মসজিদ!মসজিদ ভাঙতে চেয়ে করা মামলায় নোটিশ জারি কোর্টের

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

Gyanvapi-mosque-Twitter-1200x900-10-5-19

নিউজ ডেস্ক : “অযোধ্যা বাবরি তো সের্ফ ঝাঁকি হ্যায় কাশী-মথুরা বাকি হ্যায়!” এটাই ভারতবর্ষের বর্তমান শাসক দল বিজেপির আশ্রিত হিন্দুত্ববাদী উগ্রবাদীদের মুসলিম বিরোধী বুলির অন্যতম প্রধান অংশ। আর এটাকে সামনে রেখেই বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে সেখানে ধাম মন্দির নির্মাণ করার সময় কাশী-মথুরা এবং বারাণসীতে বিভিন্ন প্রাচীন ইসলামিক স্থাপত্য ভেঙে সেখানে রাম মন্দিরের ধাঁচে বিতর্কিত মন্দির স্থাপনের শপথ গ্রহণ করে উগ্র হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলি। যেহেতু ভারতে বাবরি মসজিদ ভেঙে সেখানে রাম মন্দির করা সম্ভব হয়েছে সুপ্রিমকোর্টের হাত ধরেই তাই প্রথমে বিভিন্ন কোর্টে মামলা করার পথে হাঁটছে হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী সমূহ। আর এবার তেমনই এক মামলায় অনেকটা সাফল্য পেল তারা। এবার তাদের নজর বারাণসীর জ্ঞানভাপী মসজিদ।

উত্তরপ্রদেশের প্রাচীন বারানসি শহরের ঐতিহ্যবাহী মসজিদ জ্ঞানভাপি। কিংবদন্তি মোঘল বাদশাহ আলমগীর ওরঙ্গজেব নির্মাণ করেছিলেন ১৬৯৯ খ্রিস্টাব্দে। কিন্তু আগাগোড়াই মসজিদটির বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে আসছে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন কট্টর হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলি। সেই সমস্ত গোষ্ঠীর ১০ জন সদস্য মিলে বারানসি জেলা আদালতে মামলা দায়ের করে মসজিদ অপসারণের জন্য। তারা তাদের মামলায় ভারতীয় সংবিধানের ধারা ২৫ এর উদ্ধৃতি দিয়েছে। যেখানে ভারতের প্রত্যেকটি নাগরিককে স্বাধীনভাবে নিজের ধর্ম পালন, প্রচার এবং প্রসার এর অনুমতি দেয়া হয়েছে। তাদের যুক্তি হলো ওই মসজিদ অপসারণ করে সেখানে মূর্তিপূজারীদের মূর্তি পূজা করতে দিতে হবে কারণ সংবিধান নাকি তাদের সেই অধিকার দেয়। স্বভাবতই বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে যদি তাদের সেই অধিকার থাকে তাহলে ইতিমধ্যেই যেখানে মসজিদ রয়েছে সেখানে মুসলিমদেরই সবার প্রথম সেই অধিকার আছে। ভারতীয় সংবিধান বলে, সংবিধান কার্যকরী হবার আগে ভারতবর্ষের যে সমস্ত ঘটনা ঘটেছিল সে ব্যাপারে সংবিধান কোন কিছুই করবে না। তাই পূর্বে যদিও কোন বাদশা বা সম্রাট কোন মন্দির বা মসজিদ ভেঙে কোন অন্য ধর্মীয় স্থাপনা গড়ে তুলে থাকে তা পুনরায় এখন পরিবর্তন করা সংবিধানের ধারা মেনে কখনোই সম্ভব নয়।

তবে বারানসি জেলা আদালতের তরফ থেকে ঐতিহাসিক ওই মসজিদটি অপসারণ করতে চেয়ে দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে নোটিশ জারি করা হয়েছে। আদালত কেন্দ্র সরকার, উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার, বারানসীর সিনিয়র পুলিশ সুপারেনটেনডেন্ট, বিশ্বনাথ কাশি মন্দির ট্রাস্ট, মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের এবং জ্ঞানবাপী মসজিদ কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এই মসজিদ অপসারণ এর ব্যাপারে মতামত জানতে চেয়েছে। যাদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে মতামত জানা হয়েছে, তাদের বেশিরভাগের মতামত যে কি হবে তা খুব সহজেই অনুমেয়। তাই জ্ঞানবাপী মসজিদ এর ভবিষ্যৎ যে বাবরি মসজিদের মতোই হবে না সে কথা জোর দিয়ে আজ কেউই বলতে পারে না। সারা ভারতের মুসলিম সমাজের শুধু জ্ঞানবাপী মসজিদ নয় অন্তত ৫০ টির বেশি এমন মসজিদ এবং ইসলামি স্থাপত্য নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে যেগুলোকে ধ্বংস করার জন্য হিন্দুত্ববাদীরা রীতিমতো উঠে পড়ে লেগেছে।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর