পঞ্চায়েতে ভোট লুট রুখতে রাজ্যে বৃহত্তর জোট গড়ার উদ্যোগ ওয়েলফেয়ার পার্টির

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

WhatsApp-Image-2022-09-21-at-6.46.21-PM

রাজ্যে আগামী পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা রুখতে উদ্যোগ নিল ওয়েলফেয়ার পার্টি অফ ইন্ডিয়া। বুধবার কলকাতার একাডেমি অফ ফাইন আর্টসের হল ঘরে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস বাদে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে একটি গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করে দলটি। সেখানে বিগত পঞ্চায়েত ভোটের কথা মাথায় রেখে ভোট লুট রুখতে রাজ্যে বৃহত্তর জোট গড়ার উদ্যোগ নিল ওয়েলফেয়ার পার্টি।
এদিনের বৈঠকে কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া, পিডিএস, আইএসএফ, বিএনপি, ডিএনপি, এআইএমআইমীম, এসডিপিআই, পিপিএফ, আইইউএমএল,জয়ভীম ইন্ডিয়া নেটওয়ার্ক সহ বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

বৈঠকে ওয়েলফেয়ার পার্টির রাজ্য সভাপতি মনসা সেন বলেন, “শাসক দল জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। সুষ্ঠ ভোট হতে দিচ্ছে না। বিগত নির্বাচনে বহু স্ত্রী সন্তান হারিয়েছে, স্বামী হারিয়েছে। শাসকের স্বৈরাচারী মানসিকতাকে রুখে দিতে আমাদের সবাইকে এক হয়ে লড়তে হবে। বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সবাইকে এক হতে হবে। কমন ইস্যুতে এক সঙ্গে আন্দোলন করতে হবে। জনমত গঠনের জন্য যৌথ আন্দোলন জরুরি। বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্যকে রক্ষা করতে হবে।”
দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সারওয়ার হাসান বলেন, “গত পঞ্চায়েতে বিরোধীদের নমিনেশন করতে দেয়নি। যেখানে নমিনেশন হয়েছে সেখানে আবার ভোট লুট হয়েছে। এবারও শাসক দলের তাণ্ডব লক্ষ্য করছি। বিভিন্ন মাদ্রাসা নির্বাচনে হিংসার ঘটনা ঘটছে। কিছুদিন আগে নদিয়ার পন্ডিতপুর সামসেরিয়া হাই মাদ্রাসায় ওয়েলফেয়ার পার্টির প্রার্থী ও এজেন্টদের বুথ থেকে বের করে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের গুন্ডারা ভোট লুট করেছে। পুলিশ ভোট লুট রুখতে পারেনি। আগামী নির্বাচনে তাই বিভিন্ন দলকে এক হয়ে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়তে হবে।”

সিপিআই এর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই ধরনের আলোচনা সভা আরও করুন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা নিয়ে ওয়েলফেয়ার পার্টি এই ধরনের সভা করছে, তাদের ধন্যবাদ জানাই। সবার বক্তব্য এক, বর্তমান পরিস্থিতি ভালো নেই। একটা মিথ তৈরি হয়েছিল নরেন্দ্র মোদিকে হারানো সম্ভব নয়। কিন্তু ঐক্যবদ্ধ হয়ে কৃষকরা প্রমাণ করেছে মোদিকে হারানো যায়। তিনটি কৃষক আইন বাতিল হয়েছে। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কোথায় গেল সাচার কমিটির রিপোর্ট? কোথায় গেল রঙ্গনাথ মিশ্র কমিশনের রিপোর্ট? পশ্চিমবঙ্গে ২০১১ সালের পর কোন নির্বাচনটা ভালোভাবে হয়েছে? কোনটায় হিংসা হয়নি? কোনটায় হুমকি আসেনি? পঞ্চায়েত নির্বাচনে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচন ২০২৪ সালের সেমিফাইনাল। বিজেপিকে রুখবো এবং তৃণমূল কংগ্রেসের অপশাসন থেকে বাংলাকে মুক্ত করবো।”

আইএসএফ-এর নাসিরউদ্দিন মীর বলেন, “গত বিধানসভা ভোটের পর রাজ্য জুড়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস হয়েছে। সবচেয়ে ভুগেছে আইএসএফ নেতা কর্মীরা। সেদিন অনেক সামাজিক,রাজনৈতিক বুদ্ধিজীবী নীরব ছিলেন।
আইনি প্রক্রিয়ায় ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াই করতে হবে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনে যৌথভাবে হিংসা নিয়ে অভিযোগ জানাতে হবে। এখন থেকে মুখ খুলতে হবে। জনগণ যাকে খুশি ভোট দিক, ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া যাবেনা, সাধারণ মানুষকে নিয়ে জনমত গড়তে হবে।”
আইনজীবী আনিসুর রহমান বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট করার দাবি করতে হবে। সব দল কে এক হয়ে এই দাবি করতে হবে। কেননা রাজ্য পুলিশ বা সিভিক ভোলেন্টিয়ার দিয়ে ভোট হলে নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হবে। ছোট ছোট দলগুলোর মধ্যে আলোচনা হোক। বড় দলগুলোও ছোট দলকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর জোট করুক।”

অনগ্রসর জাগরণী মঞ্চের মেঘনাথ হালদার বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচন আসছে,হিংসা হলে মরবে সংখ্যালঘু ও দলিত। প্রতিটি নির্বাচনে আমরা হিংসার মুখোমুখি হই। এখন ঐক্যবদ্ধ ভাবে হিংসার মুকাবিলা করার সময় এসেছে।”

পিডিএস এর সুকুমার ,বেদু দলুইরা হিংসা রুখতে এক সঙ্গে কাজ করার বার্তা দেন। সুকুমার বাবু বলেন, “ওয়েলফেয়ার পার্টির পক্ষ থেকে এই ধরনের সভা করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। নির্বাচনের আগেও জোট করতে হবে। বিভিন্ন ইস্যু ধরে ধরে আন্দোলন করতে হবে। শুধু ভোটের সময় জোট করলে হবেনা। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এখনই শুরু হয়ে গেছে ধমকানো। তবে মানুষের মধ্যে প্রতিরোধ করার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে। রাজ্য স্তরে বিভিন্ন দলকে যেমন ঐক্যবদ্ধ করতে হবে তেমনি জেলা স্তরেও এক হয়ে লড়তে হবে।”

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর