লকডাউনে নারীর অবস্থান নিয়ে শর্ট ফিল্মে, ইমন, অমৃতা ও ঋ

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

IMG-20200623-WA0016

এনবিটিভি ডেস্ক: আনলক ওয়ান চলছে। তবুও লকডাউনের ছায়া থেকে বেরিয়ে আসতে পারিনি আমরা। রাস্তা-ঘাটে কেমন যেন শূন্যতা। সকলের জীবনে, মনেও তৈরি হয়েছে, অনেক খানি শূন্যতা। বেশ খানিকটা ফাঁকা জায়গা। নারী মনের সেই ফাঁকা জায়গাকেই তুলে ধরতে চেয়েছে জাস্ট স্টুডিওর শর্ট ফিল্ম ‘মিসিং টু’। অভিনয় করেছেন বাংলার খুব জনপ্রিয় তিন কন্যা, অমৃতা, ইমন ও ঋ ৷ দিন কয়েক আগে মুক্তি পেয়েছে এই ছবি। ইতিমধ্যে দর্শকের মনে জায়গা করে নিতে পেরেছে ‘মিসিং টু’।

তিন ভিন্ন শহরের, তিন নারীকে তুলে ধরা হয়েছে এই ছবিতে। একাকিত্ব, নির্যাতন ও ধসে পরা অর্থনীতির মতো সমস্যার কথা বলে এই ছবি। লকডাউনের জেরে বেড়েই চলেছে এই সব সমস্যা। ছবিতে ইমনের চরিত্রের নাম আশা। তার তেমন কোনো পেশা নেই। গৃহকর্মই যেন পেশা হয়ে উঠেছে তার। লকডাউন হওয়ায়, আশার মতোই সকলে বন্দি হয়ে গিয়েছে, নিজ নিজ গৃহে। তাতে ভালই লাগছে তার।

ইমন গান গাইছেন, সেটার সঙ্গে আমরা সকলেই অভ্যস্ত। তবে অভিনয় করছেন, এটা একটু অন্যরকম। এর আগে ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মোটি’-তে খুব ছোট্ট একটা চরিত্রে দেখা গিয়েছে তাঁকে। পুরোদস্তুর অভিনয় ‘মিসিং টু’- তেই করলেন, বলা চলে। ছোট থেকেই নাকি অভিনয় করার একটা লুকোনো ইচ্ছে ছিল ইমনের। এই ছবিতে কাজ করা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল, বলে জানালেন তিনি। ইমনের কথায়, ‘প্রথমে আমি যে একবারে রাজি হয়ে গিয়েছিলাম তা নয়। চরিত্রটা নিঃসন্দেহে ভাল। আমি করতে পারবো কি না সেটা নিয়েও সংশয় ছিল। কারণ নিজের অংশটা, নিজেকেই শ্যুট করতে হবে। আমাকে ভিডিও কল- এ শর্ট ডিভিশন বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বেশ ভাল লেগেছে কাজটা করে।’ গৃহবধূর চরিত্র, সাজটাও হতে হবে মানানসই। আটপৌরে আশা হয়ে ওঠার জন্য নিজেই মেক আপ করছেন ইমন। অভিনয় না গান গাওয়া, কোনটা বেশি কঠিন। এই প্রশ্নের উত্তরে শিল্পী বললেন, ‘কোনোটাই কঠিন নয়। ভালবেসে করলে কঠিন মনে হয় না। কীভাবে আরও ভাল করবো সেই নিয়ে একটা চিন্তা থাকে। আমি নিখুঁত ভাবে অভিনয় করার চেষ্টা করেছি। যাতে কেউ না বলতে পারে, যে ইমন পারেনি। আমি চাইনি কেউ বলুক যে গান গায় তো, এইটুকু ভুল হয়ে যেতেই পারে। আশাকরি সেটা পেরেছি।

এই ছবির আর এক কন্যা অমৃতা। চরিত্রের নাম মুসকান। আইটি সেক্টরে চাকরি করে সে। লকডাউনে, তার বেতনের অর্ধেক অংশ কেটে নেওয়া হয়েছে। বাড়ি থেকে দূরে, অন্য শহর ব্যাঙ্গালোরে মুসকান। অর্ধেক বেতন দিয়ে কীভাবে দিন যাপন করবে, সেটাই ভেবে চলেছে সে। এই চিত্রটাও আমাদের সকলের খুব পরিচিত। বেসরকারি, প্রায় সবকটা কোম্পানি বেতন কমিয়ে দিচ্ছে। অমৃতা জানালেন যে আশপাশের পরিস্থিতির আয়না বলা যায় এই ছবি। সত্যি ঘটনার অবলম্বনে তৈরি হয়েছে ‘মিসিং টু’। তাঁর কথায়, ‘চরিত্রটা করে খুব ভাল লেগেছে। চরিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে আমার বেশ কিছু ভাবনা ছিল। মুসকান সমস্যায় রয়েছে। কিন্তু বাড়িতে নিজের সমস্যার কথা বলতে পারছে না। বাড়ির লোকেরাও বুঝতে পারছে না, ও ঠিক কতটা সমস্যায় আছে। মানসিক দোলাচলে মুসকান। চরিত্রের এই দিকটা আমাকে আকর্ষণ করেছিল।’

প্রযোজক সূচন্দ্রা ভানিয়ার তরফ থেকে প্রস্তাব আসে এই ছবিতে কাজ করার। অনেক দিন অভিনয় না করতে পারার, একটা খারাপ লাগা ছিল। চরিত্রটা ভাল লাগায়, এক কথায় রাজি হয়ে যান অমৃতা। নিয়েই শ্যুট করেন তিনি। বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্যুটিং করা কতটা সম্ভব। এই প্রসঙ্গে অমৃতা বললেন, ‘ শর্ট ফিল্ম বাড়িতে শ্যুট করার একটা মজা আছে। আর যেহেতু আমরা ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে নিজের সঙ্গে কথা বলছি, তাই কারও সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার কিছু নেই। কিন্তু সিরিজ বা ছবি এভাবে শ্যুট করা, আমার মনে হয় সম্ভব নয়। খুব ছোট্ট ইউনিট নিয়ে হয়তো কাজ করতে হবে। কিন্তু ধারাবাহিকের ক্ষেত্রে যেভাবে সেট স্যানিটাইজ করছে, ছবির ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব নয়।’ প্রতিটি পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষরা সমস্যায়। তবে বিনোদন জগৎ কবে মূল স্রোতে ফিরে আসবে, সেই নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন রয়ে গিয়েছে। অমৃতা জানালেন, ‘ তিন মাসের বেশি আমি শ্যুট করিনি। কবে করবো জানি না। এমন হয় আমাদের পেশায়, যে কাজ নেই বা কাজ পিছিয়ে যায়। তবে এই ক্ষেত্রে কেউ জানে না কী হবে। গভীর অনিশ্চয়তা রয়েছে।’

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর