গো রক্ষকদের মতো মুসলিম বিরোধীরা হিন্দু নয়, উত্তর প্রদেশ নির্বাচনের আগে বিপদ বুঝে সম্প্রীতির বুলি RSS প্রধানের মুখে

নিউজ ডেস্ক : সামনে উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন। ব্যর্থ যোগীর ওপর ভরসা নেই রাজ্যবাসীর। তথাকথিত মোদি ম্যাজিক এখন অতীত। সাম্প্রদায়িকতা চালিয়েও মুসলিম ভোট পাওয়ার চেষ্টায় হিন্দু মুসলিম ঐক্যের বুলি শোনা গেল হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএস প্রধানের মুখে। রবিবার মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চের অনুষ্ঠানে নিজেদের স্বভাব বিরোধী এমন বক্তব্য দেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত। পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, “যে বা যাঁরা গো-রক্ষার দোহাই দিয়ে গণরোষ তৈরি করে কাউকে কাউকে আক্রমণ করছেন, তাঁরাও হিন্দুত্বের বিরোধী। মনে রাখতে হবে, ভারতের হিন্দু মুসলমান একই উৎস থেকে এসেছেন।”

উগ্র হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির প্রধান প্রোমোটার আরএসএস এখন মুখে এক রকম কাজে একরকম নীতি নিয়েছে বলে মনে হয়। মোহন ভাগবত এদিন আগাগোড়াই গাজিয়াবাদের সভামঞ্চ থেকে সাম্প্রদায়িক ঐক্যের কথা বলেছেন। তবে তিনি বলেন, ভোটের জন‌্য তিনি এসব কথা বলেছেন, এমন নয়। ভাগবত মনে করেন, “গরু একটি পবিত্র প্রাণী। কিন্তু গো-রক্ষার কারণে যাঁরা গণরোষ তৈরি করে আক্রমণ করছেন, তাঁরা হিন্দুত্ব থেকে বিচ্যুত হচ্ছেন। আইন আইনের পথেই চলবে।”

 

মুসলিমদের উদ্দেশ্যে তাঁর মন্তব‌্য, “মুসলিমরা ভারতে বিপদে আছেন, এই বক্তব্যের মধ্যে যে ফাঁদ তৈরি করা হচ্ছে, তাতে ভারতীয় মুসলিমরা পা দেবেন না।” তিনি মনে করেন, সাম্প্রদায়িক ঐক‌্য ছাড়া কখনওই দেশের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। আর সেই জন‌্যই জাতীয়তাবাদের প্রসার দরকার, দরকার দেশপ্রেম। ভারতের পূর্বপুরুষদের যে ঐতিহ‌্য, তাঁকে রক্ষা করাই লক্ষ‌্য হওয়া উচিত। হিন্দু মুসলমানের ধর্মীয় মতের বিরোধ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু তা অনৈক্যের রূপ কখনও যেন না নেয়।” সভামঞ্চ থেকে তিনি স্পষ্ট করেন, “আমরা গণতন্ত্রে বাস করি। এখানে হিন্দু বা মুসলিম কারওরই প্রাধান‌্য থাকতে পারে না। এখানে প্রাধান‌্য পাবে শুধু ভারতীয়রা। আমাদের দেশকে শক্তিশালী করতে কাজ করতে হবে। সমাজের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।” তবে এতদিন পরে কেন তার মুখ সম্প্রীতির বুলি তা বুঝতে সময় লাগেনি নেট নাগরিকদের। নিত্যদিন আরএসএস এর সঙ্গে হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীরা মুসলিমদের হত্যা করছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিজেপি আরএসএস। তাদেরকে সমাজে হিন্দু বীর ঘোষণা করা হচ্ছে। মুসলিমদের সমাজের প্রত্যেক স্তরে বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে কিন্তু তাও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি হিন্দুত্ববাদী শক্তির। হঠাৎ এখন সম্প্রীতি ঐক্যের জয়গান দ্রুত অগ্রসর হওয়া বিধানসভা নির্বাচন যে আরএসএস কে চিন্তায় রেখেছে তারই সাক্ষ্য দিচ্ছে।

Latest articles

Related articles