আযান বন্ধের ষড়যন্ত্র এবার এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কট্টর হিন্দুত্ববাদী উপাচার্যের

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

1615976639_500-321-Inqilab-white

নিউজ ডেস্ক : বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী গেরুয়া শক্তি ক্ষমতায় আসার পর থেকে একের পর এক ষড়যন্ত্রের বীজ বপন করা হচ্ছে মুসলদের বিরুদ্ধে। কখনো মুসলিমদের খাওয়া দাওয়ার পছন্দ এবং অধিকার নিয়ে তো কখনো তাদের পরিধান, কথন এবং শ্রবণের বিষয়বস্তু নিয়ে। কখনো জোর করে কাউকে গোহত্যাকারী অপবাদ দিয়ে আবার কখনো জবরদস্তি কট্টর হিন্দুত্ববাদি শব্দ মালা জয় শ্রীরাম বলিয়ে খুন করছে গেরুয়া সন্ত্রাসীরা। আবার কখনো আদালতে মামলা করা হচ্ছে নামায বন্ধে আবার কখনো মামলা করা হচ্ছে আযানের বিরুদ্ধে আবার চক্রান্ত হচ্ছে ভারতের মুসলিমদের উজ্জ্বল ইতিহাস ঐতিহ্য এবং গৌরব ধ্বংস করে জাতিকে মেরুদণ্ডহীন করার। কখনো কোনো ভাড়া করা তথাকথিত মুসলিম নামধারী দালালকে দিয়ে কুরআন শরীফের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে আবার কখনো কেন্দ্রের হিন্দুত্ববাদি শক্তি ষড়যন্ত্র করে দেশের সমগ্র ২০ কোটি মুসলিম জাতিকে নাগরিকত্ব হীন করে ডিটেনশন সেন্টারে পচিয়ে মারার। একের পর এক ষড়যন্ত্রে বিদ্ধস্ত এই জাতী এখন প্রায় কোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধেই তেমন প্রতিবাদ করেনা। পবিত্র কোরআন শরীফের বিরুদ্ধে মামলায় ও অনেকাংশে চুপ এদেশের আলেমরা। এবার আরো নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করল উত্তরপ্রদেশের এক কট্টর হিন্দুত্ববাদী মহিলা। এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চান আযানের আওয়াজ স্তব্ধ করে দিতে।

ভোরে মসজিদের মাইকে আজানের সুর ভেসে এলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে, এমনকী তার নাকি শুরু হয়ে যায় মাথাব্যথাও। তাই অবিলম্বে তার বাড়ির কাছে অবস্থিত মসজিদে মাইকে আজান দেয়া বন্ধ করতে এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চিঠি দিয়েছে জেলাশাসককে। জেলাশাসকও তাকে আশ্বস্ত করেছেন, আইন অনুযায়ী যা করা যায়, তিনি করবেন।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাহাবাদে বিতর্ক শুরু হয়েছে। যোগীর রাজ্যের উগ্রবাদী গেরুয়া শিবিরের অনেকেই মাইকে আজান বন্ধ করার পক্ষে সায় দিয়েছেন। পাশাপাশি উল্টো কথাও শোনা যাচ্ছে মুসলিম এবং সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে। বিজেপি এই এলাকায় ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই ধরনের বিষয় সামনে আসছে বলে অভিযোগ উঠছে। এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই উপাচার্যের নাম সঙ্গীতা শ্রীবাস্তব। তিনি জেলাশাসক ভানুচন্দ্র গোস্বামীর কাছে লেখা ওই চিঠিতে আরও জানিয়েছেন, আজান থেমে গেলেও ঘুম আর আসতে চায় না। মাথা ধরে থাকে। যার প্রভাব পড়ে সারাদিনের কাজে। তবে তার চিঠিতে তিনি পরিষ্কার করে দিয়েছেন, তিনি কোনও ধর্মের বিরোধী নন। কিন্তু রমজানের সময় ভোর চারটে থেকে মসজিদের মাইকে যেভাবে ঘোষণা শুরু হয়ে যায়, তাতে এলাকার মানুষদের অসুবিধা হয়। তার চিঠির কপি ইতিমধ্যেই ডিভিশনাল কমিশনারের কাছেও পাঠিয়েছেন তিনি।

এই অভিযোগ ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। অযোধ্যার সন্ন্যাসী ও পুরোহিতরা উপাচার্যকে সমর্থন করছেন। তাদের দাবি, খুব জোরে না বাজিয়ে যদি মাইকে মাঝারি শব্দে আজান বাজানো হয় তাহলে কারও অসুবিধেই হবে না। উপাচার্যকে সমর্থন করে বিবৃতি দিয়েছেন বিজেপি মুখপাত্র মণীশ শুক্লা। তার কথায়, ‘ভারতের সংবিধান ও আইন প্রত্যেককেই অধিকার লঙ্ঘিত হলে প্রতিবাদের অধিকার দিয়েছে।’ সমাজবাদী পার্টির মুখপাত্র অনুরাগ ভাদোরিয়া আবার কাঠগড়ায় তুলেছেন বিজেপিকে। তার অভিযোগ, ‘যখন থেকে বিজেপি এখানে ক্ষমতায় এসেছে, সব ইস্যুর সঙ্গেই জাতপাত ও ধর্মকে জুড়ে দেয়া হয়েছে। উন্নয়নের কোনও চিহ্নই নেই।’

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর