কাফিল খানের পর মিথ্যা মামলায় যোগীর কারাগারে আটক আরো এক বিশিষ্ট মুসলিম নেতা

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

20201213_122548-768x512

সাইফুল্লা লস্কর : ডাক্তার কাফিল খানের পর মিথ্যা, সাজানো ও ভিত্তিহীন অভিযোগের ভিত্তিতে যোগীর কারাগারে আটক আরও এক বিশিষ্ট মুসলিম নেতা রউফ শরীফ। পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার ছাত্র শাখা ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার সেক্রেটারি জেনারেল শরিফকে গত বছর ডিসেম্বর মাসে যোগী সরকার গ্রেফতার করে বৈষম্যমূলক এবং ভারতীয় সংবিধানের মৌলিক মূল্যবোধের পরিপন্থী নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এবং এন আর সি এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কারণে। তবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় গণতান্ত্রিক পরিবেশে আন্দোলনে যোগদানের ফলে তার বিরুদ্ধে আদালতে কোন প্রমাণ পেশ করতে পারেনি কট্টর হিন্দুত্ববাদী যোগীর অধীনস্থ উত্তর প্রদেশ পুলিশ। তাই এবার তার বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ আনলো ইডিকে ব্যাবহার করে।

আদালতে ইডির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, রউফ শরীফের বৈদেশিক মুদ্রার আয় সন্দেহজনক মনে হয়। কোন প্রমাণ না পেলেও ইডি এমন মিথ্যা অজুহাত দিয়ে আগামী ১২ ই জানুয়ারি পর্যন্ত শরীফের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করিয়ে নেয় আদালতে। এছাড়াও তারা জানায় সিএফআই এর সেক্রেটারি আর্থিক ভাবে সাহায্য করেছেন হাথ্রাস গণধর্ষণ মামলায় সম্প্রদায়িক রং দেওয়ার চেষ্টা করা ব্যক্তিদেরকে। উল্লেখ্য সিএফআই এর একটি প্রতিনিধিদল হাথরাশ কাণ্ডের পর নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে রওনা হলে যোগী সরকার তাদেরকে আটক করে। এবং তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আইন ইউএপিএ আরোপ করা হয়। সেই প্রতিনিধিদলকে সাহায্য করেছিলেন শরীফ।

উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে এক আদিবাসী মহিলার গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের আড়াল করার চেষ্টা করে যোগীর সরকার। এই ধর্ষণের ঘটনাটিকে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে ধর্ষণ নয় এবং এটিকে রাজ্য সরকারের বদনাম করার রাজনৈতিক প্রচেষ্টা বলেও আখ্যা দেয়ার চেষ্টা করে যোগী সরকার। এমনকি নির্যাতিতার দেহ পরিবারের সম্মতির বিরুদ্ধে পুলিশ দিয়ে মধ্যরাত্রিতে জ্বালিয়ে দেয় সরকার। প্রমাণ লোপাটের এবং ঘটনাটির মোড় অন্যদিকে ঘোরানোর বহু প্রচেষ্টার পরেও প্রকৃত সত্য উঠে আসে সিবিআই তদন্তে। চার্জশিট দাখিল করা হয় চারজনের বিরুদ্ধে।

উল্লেখ্য কেন্দ্রের মোদি সরকার এবং সমস্ত বিজেপি শাসিত রাজ্য গুলির সরকারকে পুলিশ এবং তদন্ত সংস্থাগুলোকে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ এবং সরকারবিরোধী সমালোচনা বন্ধের উদ্দেশ্যে নির্লজ্জ ভাবে ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে বার বার। এর জন্য বিরোধীদল, বুদ্ধিজীবী সমাজ সহ সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে বারবার প্রতিবাদের ঝড় উঠলেও তা পাত্তাই দেয়নি মোদি সরকার। কেন্দ্রীয় গণতান্ত্রিক সংস্থাগুলির শাসন এবং স্বাধীনতার ব্যাপারে কংগ্রেসের আমলে অতি সক্রিয় থাকা সুপ্রিম কোর্ট বিজেপির আমলে দেখেও কিছু যেন দেখে না। এ ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়।

মোদি সরকারের জামানায় সরকারবিরোধী সমস্ত সমালোচনা বন্ধের জন্য পুলিশ এবং সমস্ত তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ব্যাপক পরিমাণে ব্যবহার করতে দেখা গেছে। ছাত্রনেতাদের কে গ্রেফতার করা হয়েছে ভুয়া মামলা মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে এবং আটক করে রাখা হয়েছে অনির্দিষ্টকালের জন্য।” নিজেদের বিবৃতিতে এমনই অভিযোগ তুলেছে ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া।

এদিকে সিএফআই এর জাতীয় সেক্রেটারি নাসির উদ্দিন এরামালাম জানিয়েছেন, বিজেপি পরিচালিত সরকার রাজনৈতিক আন্দোলন গুলিকে কোণঠাসা করার জন্যই তাদের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ আনছে।

গত ২৬ শে ডিসেম্বর পিএফআই একটি বিবৃতিতে জানায়, তাদের অ্যাকাউন্টে সব লেনদেন স্বচ্ছ এবং যেকোনো সরকারি সংস্থার পর্যবেক্ষণের জন্য উন্মুক্ত আছে।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর