‘বুল্লি বাই’ কাণ্ডের মূল পাণ্ডা অসমে গ্রেফতার দিল্লি পুলিশের জালে, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

বুল্লি বাই কাণ্ডের অভিযুক্ত।
বুল্লি বাই কাণ্ডের অভিযুক্ত।

এনবিটিভি ডেস্কঃ  নববর্ষের সকাল মানে জীবনের এক নতুন সালে পরিকল্পনা গুলি নয়া রুপে সাজানোর এক সুন্দর মুহূর্ত। কিভাবে এই বছরটা কাটাবে তার একটা কল্পিত খসড়া তৈরি করা। যদিও পুরটাই তা বাস্তবায়ন হয়ে ওঠেনা। আর এই কল্পিত খসড়া পুরুষ ও মহিলা এমনকি সব বয়সীরাই প্রস্তুত করে থাকেন। অনেকেই বছরের শুরুটা পাওয়ার জন্য রাত্রি জাগরণ করেও থাকেন। নববর্ষের প্রথম দিনটি নিয়ে থাকে অনেক কৌতূহল।

কিন্তু চলতি বছরের নববর্ষের সকাল এক লজ্জা ও মুখ লুকিয়ে রাখার মতো পরিস্থিতি হয়ে ওঠে ভারতীয় মুসলিম মহিলাদের। শতাধিক বিশিষ্ট ভারতীয় মুসলিম মহিলাদের ২০২১ সালের প্রথম দিনের সকালটি ঘৃণিত দিন হিসাবে আজীবন মনে রাখবেন তারা।

 ভূস্বর্গ কাশ্মীরের একজন সাংবাদিক কুরাতুলাইন রেহবার। নববর্ষের সকালে তিনি  ঘুম থেকে জেগে উঠে অবাক! নিজেকে একটি “অনলাইন নিলামের” জন্য তালিকাভুক্ত দেখতে পান। ছবি ও গোপন তথ্য তার অনুমতি ছাড়াই সংগ্রহ করা হয়েছিল এবং “বিক্রয়” করার জন্য ‘বুল্লি বাই’ অ্যাপে আপলোড করা হয়।

অন্যদিকে এমনও শতাধিক মুসলিম মহিলাদের নামের তালিকা পাওয়া গিয়েছে যারা সাধারণ মহিলাদের মতো নয়। যারা দেশের সাধারণ মানুষের জন্য রোল মডেল বলা যেতে পারে। তাদেরকে এমনও ঘৃণিত কাণ্ডে যুক্ত করা হয়েছে। এই অ্যাপের সংবাদ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে তখনই আরও ঘটনা ঘোলাটে হতে থাকে।

দেখা গিয়েছে ‘বুল্লি বাই’ অ্যাপে ১০০ জনেরও বেশি মুসলিম মহিলাকে ‘দাসী হিসাবে বিক্রি করার জন্য’ নিলামে তলা হয়েছে। এই তালিকায় সাংবাদিক থেকে শুরু করে সমাজসেবীরা যেমন ছিলেন, তেমনই নাম রয়েছে সিএএ নিয়ে আন্দোলন করে জেলে জাওয়া জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদেরও।

অন্যদিকে বিশিষ্ট অভিনেত্রী শাবানা আজমি, দিল্লি হাইকোর্টের বর্তমান বিচারকের স্ত্রী, একাধিক মুসলিম সাংবাদিক, কর্মী এবং রাজনীতিবিদ সহ আরও অনেকেই।

এমনকি নিখোঁজ ছাত্র নাজিব আহমদের ৬৫ বছর বয়সী মা ফাতিমা নাফীস। পাকিস্তানি নোবেল বিজয়ী মালালা ইউসুফজাইও এই জঘন্যতম অপরাধীদের আক্রোশ থেকে রেহাই পাননি।

https://twitter.com/sayema/status/1477263957580607489?ref_src=twsrc%5Etfw%7Ctwcamp%5Etweetembed%7Ctwterm%5E1477263957580607489%7Ctwgr%5E%7Ctwcon%5Es1&ref_url=https%3A%2F%2Fwww.aljazeera.com%2Fnews%2F2022%2F1%2F2%2Fbulli-bai-muslim-women-auction-online-india

 উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসে “সুল্লি ডিল” এমনও একটি অ্যাপে প্রায় ৮০ জন মুসলিম মহিলাকে “বিক্রয়ের জন্য” নিলামে রাখা হয়েছিল। যদিও ‘সুল্লিডিল’ কাণ্ডে এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। 

এই ঘটনা যখন জনসম্মুখে আসতে থাকে তখনই মুম্বাই ও দিল্লি পুলিশ নড়েচড়ে বসে। এর পরেই শুরু হয় চিরুনি তল্লাশি। যদিও সমস্ত তথ্যই অনলাইন নির্ভর ছিল। তার উপর ভিত্তি করে সাইবার  নিরাপত্তা বাহিনী।  

বুল্লি বাই অ্যাপের নির্মাতা ২১ বছর বয়সী নীরজ বিষ্ণোইকে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশ। অভিযুক্ত নীরজকে দিল্লি পুলিশ অসম থেকে গ্রেফতার করে। এই মামলায় এখনও পর্যন্ত মোট চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

১, নিরোজ বিষ্ণোই
বুল্লি বাই অ্যাপের মূল ষড়যন্ত্রকারী অসমের জোড়হাটের বাসিন্দা। ভোপালের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র। টুইটারের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। অ্যাপটি মূলত টুইটারেই ছড়িয়ে ছিল। ইনস্টিটিউসন অব টেকনোলজির বিটেক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। দিল্লি পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সে অসমের দিগম্বরের যোরহাট এলাকার বাসিন্দা। তাকে অসম থেকে আনা হয়েছে দিল্লিতে। পুলিশ তার বাড়ি থেকে একটি কম্পিউটারও বাজেয়াপ্ত করেছে যাতে এই অ্যাপটি তৈরি করা হয়েছিল।


২. শ্বেতা সিং
শ্বেতা সিং ১৮ বছর বয়সী বুল্লি বাই অ্যাপের মাস্টার মাইন্ড বলে মনে করছে পুলিশ। পুলিশের প্রশ্ন নিজে একজন মহিলা হয়ে মহিলাদের সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য কী করে করছে শ্বেতা। শ্বেতা সিংকেও গ্রেফতার করেছে মুম্বই পুলিশ। সে একজন ইঞ্জিনিয়াংরিং কলেজের ছাত্রী। উত্তরাখণ্ড থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাকে । 

শ্বেতা সিং।

৩. বিশাল কুমার
বেঙ্গালুরু ২১ বছর বয়সী ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র। ১লা জানুয়ারি ঘটনার পরে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও তার আইনজীবীর দাবি মক্কেলকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। 

বিশাল কুমার।

৪. মায়াঙ্ক রাওয়াল
২১ বছর বয়সী আরও এক ষড়যন্ত্রকারী। উত্তরাখণ্ড থেকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। জাকির হোসেন কলেজ থেকে রসায়নে অনার্স পড়ছে। যদিও মায়াঙ্ক পুলিশকে বলেছেন ৩১ ডিসেম্বর টুইটারে বুল্লিভাই অ্যাপের লিঙ্ক সে পেয়েছিল। তার আগে এই অ্যাপ সম্পর্কে কিছুই জানত না সে। 

‘বুল্লি বাই’ অ্যাপে ১০০ জনেরও বেশি মুসলিম মহিলাকে ‘দাসী হিসাবে বিক্রি করার জন্য’ নিলামে তলা হয়েছিল। তালিকায় সাংবাদিক থেকে শুরু করে সমাজসেবীরা যেমন ছিলেন। তেমনই নাম রয়েছে সিএএ নিয়ে আন্দোলন করে জেলে জাওয়া জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদেরও।

অন্নদিকে বিশিষ্ট অভিনেত্রী শাবানা আজমি, দিল্লি হাইকোর্টের বর্তমান বিচারকের স্ত্রী, একাধিক মুসলিম সাংবাদিক, কর্মী এবং রাজনীতিবিদ সহ আরও অনেকেই।

এমনকি নিখোঁজ ছাত্র নজীব আহমদের ৬৫ বছর বয়সী মা ফাতিমা নাফীস এবং পাকিস্তানি নোবেল বিজয়ী মালালা ইউসুফজাইও এই জঘন্যতম অপরাধীদের আক্রোশ থেকে রেহাই পাননি।

 উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসে “সুল্লি ডিল” এমনও একটি অ্যাপে প্রায় ৮০ জন মুসলিম মহিলাকে “বিক্রয়ের জন্য” নিলামে রাখা হয়েছিল। যদিও ‘সুল্লিডিল’ কাণ্ডে এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে বুল্লি বাই’ কাণ্ডের পরেই দিল্লী ও মুম্বাই পুলিশ নড়েচড়ে অভিযুক্তদের।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর