সম্বীতের মিথ্যাচার প্রকাশ করায় ভারতের টুইটার অফিসে হানা দিল অমিত শাহের অধিনস্ত দিল্লি পুলিশ

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

IMG_20210525_093804

নিউজ ডেস্ক : গোদি মিডিয়ার ধাঁচে টুইটার মোদি সরকারের প্রতি ভক্তি প্রদর্শন না করায় তাদের বিরুদ্ধে নয়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে মোদি সরকার। বিজেপির মুখপাত্র এবং সাম্প্রদায়িক শক্তির অপপ্রচারের মূল হোতা সম্বিত পাত্র কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করায় তা ভুয়া বলে চিহ্নিত করে সবার সামনে বিজেপির মিথ্যাচারের প্রকাশিত হয়ে যায়। ফলে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয় মোদি সরকার। তাই তারা টুইটারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চাইছে। নিউজ এজেন্সি এএনআই অনুসারে, সোমবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় লাডোর সরাই এবং গুরুগ্রামে টুইটার ইন্ডিয়ার কার্যালয়গুলিতে দিল্লি পুলিশের একটি বিশেষ দল অভিযান চালায়। গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে যে এই অভিযানটি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কোভিড রোগীদের দেওয়া সহায়তা বাড়ানোর জন্য প্রস্তুত একটি কথিত টুলকিটের সাথে সম্পর্কিত ছিল।

মজার বিষয় হল, শুক্রবার (২১ শে মে) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটার বিজেপি-র মুখপাত্র সাম্বিত পাত্রের একটি টুইটকে ‘ম্যানিপুলেটেড মিডিয়া’ বলে চিহ্নিত করে। পাত্র ১৮ মে কংগ্রেসের একটি কথিত টুলকিটকে নিজেদের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির পরিকল্পক বলে চিত্রিত করার চেষ্টা করেন। টুইটারের এই পদক্ষেপের পরে, দিল্লী পুলিশ – যা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে – টুইটার ইন্ডিয়া এমডি মনীশ মহেশ্বরীকে একটি নোটিশ পাঠিয়েছে , ২২ শে মে তাকে জেলা প্রশাসক (বিশেষ সেল) এর লোধী কলোনী অফিসে উপস্থিত হতে বলেছিলেন। এছাড়াও, ভারত সরকার মাইক্রো-ব্লগিং সাইটকে বিজেপির মুখপত্র মুখপাত্র সমিত পাত্রের টুইট থেকে “ম্যানিপুলেটেড মিডিয়া” ট্যাগটি সরিয়ে দিতে বলেছে।

২১ শে মে এনডিটিভির একটি প্রতিবেদন অনুসারে, মোদি সরকারের ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্য মন্ত্রক টুইটারের আন্তর্জাতিক টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিজেপি নেতা সমিত পাত্রের টুইটে “ম্যানিপুলেটেড মিডিয়া” ট্যাগটি ব্যবহার করার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে সরকারের চিঠিটি টুইটারের এই পদক্ষেপকে “পূর্ববিচারযুক্ত, বিদ্বেষপূর্ণ এবং তদন্তকে অতিরঞ্জিত করার ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা” হিসাবে অভিহিত করে সমালোচনা করেছে।

“টুইটার এই পদক্ষেপের মাধ্যমে এই জাতীয় সামগ্রীর মধ্যস্থতাকারী একটি নিরপেক্ষ ও পক্ষপাতহীন প্ল্যাটফর্ম হিসাবে তার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, ব্যবহারকারীদের মতামত বিনিময় সহজতর করে তোলার বিষয়টিও জটিল করেছে” সরকার টুইটারকে লেখা তার চিঠিতে অভিযোগ করেছে।

 

গত বছরের পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট টুইটারের স্বাধীন আওয়াজ গোদি মিডিয়ায় ধাঁচে বন্ধ করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত আছে। মোদি সরকার কৃষি বিলের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা বহু অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিতে বলে সাইটটিকে। মোদি সরকার কৃষক আন্দোলনের বিরোধিতা করে ১০০০ এর বেশি টুইটার অ্যাকাউন্ট ভিত্তিহীন ভাবে খালিস্থানি এবং পাকিস্তানি ট্যাগ দিয়ে তা বন্ধ করতে টুইটার নির্দেশ দেয়। যা মানতে অস্বীকার করায় কেন্দ্র টুইটারকে হুমকি দেয় কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার। কিন্তু সেই মোদি সরকারের রোষে পড়া সেই সব অ্যাকাউন্টগুলোর বেশি কিছু লাইক করে রেখেছিলেন টুইটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডোরশি।

 

প্রতিবাদী কৃষকদের সমর্থনে টুইট করা বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বকে ঘিরে শোরগোল পড়ে ভারতের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। এর মধ্যে গায়ক ও অভিনেত্রী রিহানা, পরিবেশকর্মী গ্রেটা থানবার্গ এবং মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের ভাগ্নী মীনা হ্যারিস অন্তর্ভুক্ত ছিল। মোদী সরকার এই জাতীয় কিছু টুইটের নিন্দা জানিয়ে একটি সরকারী বিবৃতিও প্রকাশ করে, মোদি ভক্ত বহু ভারতীয় সেলিব্রিটিও সরকারের সমর্থনে কৃষকদের বিরুদ্ধে মোদি সরকারের পক্ষে এই লড়াইয়ে যোগ দিয়েছিলেন।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর