বিয়ের জন্য জোর করছে বাবা-মা, ঘর ছেড়ে পালিয়ে সরকারি অফিসার হয়ে ঘরে ফিরলো ৭ বছর পর

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

IMG-20200920-WA0011

এনবিটিভি: কথায় বলে “ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়” তা বাস্তবে প্রমাণ করে দেখিয়ে দিলো মেরঠের সঞ্জুরানি বর্মা।

সময়টা ২০১৩। গ্র্যাজুয়েশন করে ফেলেছেন উত্তরপ্রদেশের মেরঠের সঞ্জুরানি বর্মা। স্নাতকোত্তরের জন্য ভর্তিও হয়েছেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাঁর ইচ্ছা সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া।

কিন্তু পরিবার বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। বিয়ে ও স্বপ্নের মধ্যে নিজের স্বপ্নপূরণের পথই সে দিন বেছেছিলেন সঞ্জু। বাবা-মার চাপ কে উপেক্ষা করে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়লেন, নিজের স্বপ্ন পূরণে অনড় ছিলেন তিনি।।তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে নিজেই পরিবারের সঙ্গে যুদ্ধ করে ঘর ছেড়ে পড়াশোনায় করে দিলো সে।এক রাশ অনিশ্চয়তা নিয়ে ছেড়েছিলেন বাড়ি। সেই ঘটনার সাত বছর পর সম্প্রতি তিনি বাড়ি ফিরেছেন। তবে পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) পাশ করে স্বপ্নপূরণ হওয়ার পর। আগামী দিনে কমার্শিয়াল ট্যাক্স অফিসার হিসাবে কাজে যোগ দেবেন তিনি।

এ ব্যাপারে সঞ্জু বলেছেন, ‘‘২০১৩-তে আমি শুধু আমার বাড়ি নয়, স্নাতকোত্তর কোর্স ছাড়তেও বাধ্য হয়েছিলাম। কারণ আমার কাছে কোনও টাকা ছিল না। আমি একটি ঘর ভাড়া নিয়ে বাচ্চাদের পড়ানো শুরু করি। সেখানেই থাকতাম। পরে বেসরকারি স্কুলে আংশিক সময়ের জন্য শিক্ষকতার চাকরিও করতাম। যে করেই হোক আমাকে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা চালাতে হত।’’

গত সপ্তাহে বেরিয়েছে উত্তরপ্রদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন-২০১৮-র ফলাফল। সেই পরীক্ষাতেই উত্তীর্ণ হয়েছেন সঞ্জু। সেই পরীক্ষা পাশ করার জেরে আগামী দিনে কমার্শিয়াল ট্যাক্স অফিসার হিসাবে যোগ দেবেন তিনি। তবে এই পরীক্ষা পাশ করেই রণে ভঙ্গ দিচ্ছেন না তিনি। তাঁর লক্ষ্য আরও উঁচু তারে বাঁধা। সিভিল সার্ভিস পাশ করে মহকুমা শাসক হওয়ার স্বপ্ন এখনও দেখছেন তিনি।

কিন্তু ২০১৩-তে বাড়ি ছাড়ার দিনগুলি মোটেই সুখকর ছিল না সঞ্জুর। সাফল্যের আনন্দের মধ্যেও সে দিনের স্মৃতি এখনও কাঁদায় তাঁকে। সাত বছর আগের কঠিন পরিস্থিতির স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেছেন, ‘‘সে বছরই আমার মা মারা গিয়েছিলেন। তার পর থেকেই পরিবারের লোক বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে। আমি আমার ইচ্ছার কথা অনেকবার বোঝাতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু কেউ শোনেননি। বাড়িতে থেকে আমি আর কোনও আশার আলো দেখছিলাম না। তাই বাড়ি ছেড়ে একা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’’

এই সাত বছরে সঞ্জুর লড়াই কম কঠিন ছিল না। তাঁর কথায়, ‘‘আমার বাড়ির লোক মোটেই খুশি হননি আমার এই পদক্ষেপে। তার উপর সামাজিক চাপও ছিল। কিন্তু আমি আমার দায়িত্ব ও লক্ষ্যের ব্যাপারে সচেতন ছিলাম।’’

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর