সংস্কারের অভাবে বেহাল পুলিশকর্মীদের আবাসন, বিপাকে পুলিশকর্মী ও তাদের পরিবার

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

IMG-20200920-WA0034

এনবিটিভি ডেস্ক, মালদা,২০ সেপ্টেম্বর: হলদে রঙের অস্বিত্ব নেই বললেই চলে। জরাজীর্ণ দেওয়ালে পড়েছে কালচে দাগ। খসে পড়ছে পলেস্তরা। একই অবস্থা আবাসনের ভিতরেরও। বৃষ্টি হলে ছাদ চুইয়ে জল পড়ে। মাঝেমধ্যেই ছাদ থেকে চাঙড় খসে পড়ে। বেহাল আবাসনের পাশাপাশি সেখান থেকে বের হওয়ার পথও প্রায় দুর্গম। নিকাশি না থাকায় চারপাশে জল জমে রয়েছে। ইতিউতি জঙ্গল গজিয়ে উঠেছে। সেখানে হামেশাই দেখা যায় সাপ, পোকামাকড়। এমনই বেহাল আবাসন ও পরিবেশে যারা থাকেন তারা সাম্প্রতিক করোনা যুদ্ধে প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছেন ও এখনও করে চলেছেন। অনেকে আক্রান্তও হয়েছেন। পরে সেরেও উঠেছেন। লড়াই তবু থামেনি। কিন্তু মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশকর্মীদের আবাসনের এমন বেহাল দশায় হতবাক স্থানীয়রাও। মুখে কিছু বলতে না চাইলেও তারা যে রীতিমতো আতঙ্কের মধ্যে বিপজ্জ্নক আবাসনে দিন কাটাচ্ছেন তা মেনে নিয়েছেন একাধিক পুলিশকর্মী ও পরিবারের লোকজন। আবাসন সংস্কারে তাদের করার কিছু না থাকলেও চত্ত্বরের নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত কতৃপক্ষ কেন উদ্যোগী হননি সেই প্রশ্নও উঠেছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, থানার পিছনে পুলিশকর্মীদের আবাসনগুলি রয়েছে। সেখানে অফিসারদের জন্য চারটি পৃথক আবাসন রয়েছে। যেখানে পরিবার নিয়ে থাকেন অফিসাররা। এছাড়া রয়েছে চারটি পুলিশ ব্যারাক। এছাড়া কনস্টেবল, ফোর্সের জন্যও পৃথক ব্যারাক রয়েছে। এছাড়া সিভিক কর্মীদের জন্য বিশ্রামকক্ষ রয়েছে। থানায় আপাতত ১২ জন অফিসার, ১৩ জন কনস্টবল, ৮ জন হোমগার্ড ও ছয় জন মহিলা কনস্টেবল রয়েছেন। বেহাল আবাসনের জন্য বেশ কয়েকজন বাইরে বাড়িভাড়া নিয়ে থাকেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশকর্মীদের পরিবারের কয়েকজন জানিয়েছেন, থানা চত্ত্বরে আবাসনগুলি দেখলে হঠাৎ করে পরিত্যাক্ত ভুতুড়ে বাড়ি বলে মনে হবে। বেহাল আবাসনে সবসময় ভয়ে তটস্থ হয়ে থাকতে হয়।
কয়েকজন পুলিশকর্মী বলেন, রাতে ঘরে ফিরেও শান্তি নেই। জলকাদা পেরিয়ে আবাসনে ঢুকতে হয়। সেখানে সাপ, পোকামাকড় ঘুরে বেড়ায়। জল নিকাশি সমস্যা মিটলেও কিছুটা হলেও সুরাহা হত।

হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রিসবা খাতুনের স্বামী আফজাল হোসেন এই প্রসঙ্গে বলেন, থানা চত্ত্বরে জল নিকাশি সমস্যা দূর করতে পঞ্চায়েতের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব কাজ করা হবে। জেলা যুব নেতা বুলবুল খান বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি গত ছয় মাস ধরে পুলিশকর্মীরা করোনার বিরুদ্ধে সামনের সারিতে লড়াই করছেন। ওদের আবাসনের সমস্যা রয়েছে। সেটা দ্রুত মিটে গেলে খুব ভালো হয়।

পুলিশ সূত্রে খবর, ৪০ বছর আগে আবাসনগুলি তৈরি হয়েছিল। তারপর সংস্কারের অভাবে সেগুলি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, থানার আবাসন সংস্কারের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। মাপজোকও করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সংস্কার হবে। কবে সেই সংস্কার হবে, রাতের নিশ্চিত আশ্রয়ে শান্তিতে ঘুমোতে পারবেন তারা, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন একাধারে আইনের রক্ষক ও করোনা যোদ্ধারা।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর