হিন্দুত্ববাদীদের জন্য করোনা বিধির প্রয়োজন নেই যোগীর রাজ্যে! লকডাউনের মাঝে লক্ষাধিক জমায়েত গঙ্গার ঘাটে

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

IMG_20210620_152130

নিউজ ডেস্ক : উত্তর প্রদেশে নির্বাচন যত নিকটে আসছে ততই হিন্দুত্ব মন্ত্রে শান দিচ্ছে বিজেপি। সে সাধারন মুসলিমদের গণপিটুনি দিয়ে হোক বা মসজিদ ভেঙে দিয়ে হোক। কিন্তু এবার একই কারণে করোনা আঘাতে জর্জরিত দেশের কোটি কোটি মানুষকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে আবার যোগীর রাজ্যকে গঙ্গা ঘাটে একত্রিত হল লক্ষ লক্ষ হিন্দু পুণ্যার্থী। এই গঙ্গায় শত শত মৃতদেহ ভেসে আসার খবর এখনও সবার স্মৃতিতে তাজা। তারই মাঝে লকডাউনের বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে উত্তরপ্রদেশের একাধিক ঘাটে গঙ্গা দশেরা উপলক্ষ্যে হাজার হাজার মানুষের ভিড় জমে। হাপুরের ব্রজঘাট, বারাণসী বিভিন্ন ঘাট, ফারুক্কাবাদ-সহ একাধিক জায়গায় কোনও সামাজিক দূরত্ববিধি না মেনেই গঙ্গা স্নান করতে নামতে দেখা যায় হাজার হাজার মানুষকে। এএনআই সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই এক দৃশ্য দেখা গিয়েছে হরিদ্বারের ঘাটগুলিতেও। অথচ নিয়ম অনুযায়ী, সংক্রমণ কমলেও যে কোনও জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। শপিং মল, দোকান, বাজার খুলে গেলেও, যে কোনও ধর্মীয় স্থানে একবারে ৫ জনের বেশি উপস্থিতির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। অথচ সরকারের জারি করা নিয়ম ভেঙে একাধিক ঘাটে গঙ্গা স্নান করতে দেখা যায়।

 

বিভিন্ন সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়া ছবিতে দেখা গিয়েছে, যাঁরা গঙ্গা দশেরা উপলক্ষ্যে ভিড় জমান তাঁদের কারও মুখে মাস্ক ছিল না। করোনা আবহ ভুলেই গঙ্গা স্নানে মেতে ওঠেন তাঁরা। এক্ষেত্রে যোগী প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন সবাই। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের মুখে উত্তরপ্রদেশের প্রশাসন। ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে সমালোচনাল ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। দেশে করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গের জন্য বিশেষজ্ঞরা মোদি সরকারের দ্বারা আয়োজিত রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় জনসমাগমকে দায়ী করেছিলেন। এর মধ্যে প্রধান ছিল উত্তরাখণ্ডের কুম্ভ মেলা। যা থেকেই দেশে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। লক্ষ লক্ষ করোনা আক্রান্ত রোগীর উৎস ছিল কুম্ভ মেলা, যা বিজেপি সরকারের তোষণের ফল ছিল।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ-এর এই মৃত্যু মিছিলের জন্য কুম্ভ মেলাকেই দায়ী করেন বিশেষজ্ঞরা। কিছুদিন আগে এই মেলার বিভিন্ন দুর্নীতিও প্রকাশ্যে আসে। এমনকি হরিদ্বার কুম্ভমেলাকে করোনা সুপার স্প্রেডার ইভেন্ট হিসেবে উল্লেখ করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। ইতিমধ্যেই অতিমারী বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন অক্টোবর মাসের মধ্যেই দেশে আছড়ে পড়তে পারে করোনার তৃতীয় তরঙ্গ। দ্বিতীয় তরঙ্গের সংক্রমণ কমতেও লকডাউন শিথিল করা হচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যে। তবে এর মধ্যে আবার এই ব্যাপক ভিড়ের আয়োজন তৃতীয় ঢেউকে দ্বিতীয় দফার ঢেউয়ের মতো বিপদজনক করে তুলবে বলে আশঙ্কা অনেকের। তাই নেট মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, তাহলে কি হিন্দুত্ববাদীদের রাজনৈতিক স্বার্থে করোনা বিধি ভঙ্গ করা যেতে পারে? কেন বার বার এমন হিন্দু ধর্মীয় জমায়েতকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে ? বিনা প্রমাণে তাবলিগ জামাতের বিরুদ্ধে অন্তহীন অপপ্রচার করা গেরুয়া মিডিয়া এখন নিরব কেন?

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর