তালিবানের সরকার গঠনের পক্ষে সমর্থন আরব দেশগুলোর, জোর সব জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তির ওপর

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

1630945788_8

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান গত রবিবার আফগানিস্তানে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক বন্দোবস্তের গুরুত্বের বিষয়ে একমত হয়েছেন। গত মাসে তালিবানরা তড়িঘড়ি করে কাবুল দখল করলে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং ২০ বছর পর এ গ্রুপ ক্ষমতা গ্রহণ করে।
ইসলামাবাদে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা বিবৃতি অনুসারে, দু’নেতা টেলিফোন কথোপকথনে আফগানিস্তানের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রী ইমরান সউদী ক্রাউন প্রিন্সকে বলেন, একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল আফগানিস্তান পাকিস্তান এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যাবশ্যক। তিনি আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে আফগানদের পাশে দাঁড়ানো এবং দেশটির পুনর্গঠনে অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি জরুরি মানবিক প্রয়োজন মেটাতে এবং প্রতিবেশী যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন। ফোনে তারা সম্মত হয়েছেন যে, আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে অবশ্যই আফগানিস্তানে তার অংশগ্রহণ বাড়িয়ে তুলতে হবে যাতে সেখানে মানবিক ও শরণার্থী সঙ্কট এড়ানো যায়।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান দুই পবিত্র মসজিদের জিম্মাদার বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের জন্য উষ্ণ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সউদী আরবের সঙ্গে ঐতিহাসিক ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরো দৃঢ় করার পাকিস্তানের আকাক্সক্ষা এবং সউদীর সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখন্ডতার জন্য ইসলামাবাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
আবহাওয়া পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব এবং পরিবেশের অবক্ষয় মোকাবেলায় সম্প্রীতি ক্রাউন প্রিন্স ঘোষিত দুটি ঐতিহাসিক উদ্যোগের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী এ বছরের অক্টোবরে রিয়াদে নির্ধারিত মধ্যপ্রাচ্য সবুজ উদ্যোগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানোর জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান।
আবু ধাবির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন জায়েদের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী আফগানিস্তানের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে পাকিস্তানের দৃঢ় ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার প্রতি যে গুরুত্বের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছন।
আফগানিস্তানের সামপ্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী ইমরান জোর দিয়ে বলেন যে, একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল আফগানিস্তান পাকিস্তান ও অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থে প্রয়োজন। তিনি বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আফগানিস্তানের জনগণের অধিকারের সুরক্ষার জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক সমঝোতা সর্বোত্তম উপায়।
আসন্ন ‘এক্সপো ২০২০’ এর জন্য চমৎকার ব্যবস্থা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী ক্রাউন প্রিন্সকে অভিনন্দন জানান। তিনি মেগা ইভেন্টের সাফল্যের জন্য শুভ কামনা জানান। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান এবং ক্রাউন প্রিন্স অভিন্ন স্বার্থের সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে একটি টেলিফোন আলাপে আফগানিস্তান প্রসঙ্গও উত্থাপন করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ৪০ বছর ধরে সঙ্ঘাত ও অস্থিতিশীলতার পর আফগানিস্তানে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার সুযোগ এসেছে। তিনি কাতারের সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব আরো জোরদারে পাকিস্তানের আকাক্সক্ষাও পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি কোভিড-১৯ মহামারির সময় পাকিস্তানকে কাতারের সাহায্যের প্রশংসা করেন, বিশেষ করে দুই দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নে কাজ করা দুই লাখেরও বেশি পাকিস্তানি প্রবাসীদের সুরক্ষার জন্য।
দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থ, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখতে সম্মত হন।

সূত্র : ডেইলি ইনকিলাব

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর