তালিবানের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস ইউরোপীয় ইউনিয়নের

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

image-463891-1631340687

যত দিন যাচ্ছে ততই পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষদের। ক্রমশই সেদেশে তীব্র হচ্ছে খাদ্য সঙ্কট। এহেন পরিস্থিতিতে কাবুলের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা ইউরোপীয় ইউনিয়নের। জাতিসংঘ ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে অর্থসাহায্যের আশ্বাস দিল তারা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ বিষয়ে গত বুধবার বৈঠকে মিলিত হন তালিবান নেতারা। সেখানেই এই আশ্বাস দেওয়া হয় তাদের।কাতারের রাজধানী দোহায় ইউরোপীয় ১৬টি ইউরোপীয় দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির নেতৃত্বাধীন একটি দলের বৈঠক হয়। তালিবান এ বৈঠক সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। তারা জানিয়েছে, বৈঠকে সকল অংশগ্রহণকারীই তাদের তরফে সম্ভাব্য প্রচেষ্টার আশ্বাস দিয়েছে।ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা তালেবান সদস্যদের সাথে দেখা করেছেন, কারণ দলটি আফগানিস্তানের ভয়াবহ মানবিক সঙ্কট মোকাবেলায় তহবিল আনলক করতে চায়। আলোচনা শেষে এক বিবৃতিতে ইইউর পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়। যদিও বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নেওয়া পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে কোনো নির্দিষ্ট বিবরণ দেয়া হয়নি।আলোচনায় অংশ নেয়া আফগানিস্তানের জন্য ইইউ বিশেষ প্রতিনিধি টমাস নিকলাসন বলেছেন, ব্লকটি জাতিসংঘ এবং মানবিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে ৫০ কোটি ইউরো (৫৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার) সহায়তা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তালিবান এখনও কোন দেশের স্বীকৃতপ্রাপ্ত হয়নি এবং এর অনেক সিনিয়র কর্মকর্তা এখনো পশ্চিমা এবং জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞায় রয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, যা একটি ব্যাংকিং সঙ্কটের সূত্রপাত করেছে। নরওয়ের রাজধানী অসলোতে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি পশ্চিমা কূটনীতিকদের সাথে সাক্ষাতের কয়েক সপ্তাহ পরে এ আলোচনা হয় যেখানে মানবাধিকারের সমস্যা এবং মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল।নিকলাসন একটি টুইটার পোস্টে যোগ করেছেন যে, তালেবানরা ‘মার্চের পরে সারা দেশে ছেলে ও মেয়েদের জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে’।ইউএনডিপির অনুমান অনুযায়ী তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকার দ্রুত ক্রমশ অবনতিশীল মানবিক সঙ্কটের সাথে ৯৭ শতাংশ জনসংখ্যা দারিদ্র্যসীমার নীচে ডুবে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।গত বছরের আগস্টে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির পশ্চিমা-সমর্থিত সরকারকে পতনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী দলটি পশ্চিমাদের হাতে আটক বিলিয়ন ডলার অর্থ ফেরত চাইছে। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলো তাদের মুক্তিকে দেশের মানবাধিকার রেকর্ডের উন্নতির সাথে শর্তযুক্ত করেছে, বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে।গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকা আফগান রিজার্ভের ৭ বিলিয়ন ডলার আফগানিস্তানকে সহায়তা করার জন্য এবং ১১ সেপ্টেম্বর, ২০০১ সালের হামলার শিকারদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য একটি তহবিলের মধ্যে ভাগ করা হবে।বুধবার জারি করা এক বিবৃতিতে মোত্তাকি বলেন, মানবিক সহায়তা বা ক্ষতিপূরণে এই অর্থ ব্যয় করা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে গ্রহণযোগ্য নয়।পশ্চিমাদের প্রতিশ্রুত মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার সাহায্য একটি বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে চ্যানেল করা হবে, যার অর্থ তহবিলটি সরকারি বিভাগগুলোর মাধ্যমে যাবে না।তালেবানরা বারবার ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় তাদের আগের ক্ষমতার তুলনায় একটি নরম নিয়মের অনুশীলনের কথা বললেও মহিলাদের ওপর বিধিনিষেধ এখনও বলবৎ রয়েছে।মহিলাদের বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করতে বাধা দেওয়া হয়েছে এবং উচ্চ বিদ্যালয়ের মেয়েদের এখনও ক্লাসে যেতে দেওয়া হয় না। যদিও তালেবান আগামী মাসের শেষের দিকে সব বয়সের মেয়েদের স্কুলে ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।ছয়টি জিসিসি উপসাগরীয় রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতরা তালেবান প্রতিনিধিদলের সাথে তাদের বৈঠকে মহিলাদের কাজ এবং অধ্যয়নের অধিকারের বিষয়টি উত্থাপন করার একদিন পরে এই আলোচনা হয়।

সূত্র : ডেইলি ইনকিলাব

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর