বাপি মিয়ার আজব খোয়াব

~হাফিজুর রহমান, আসোসিয়েট এডিটর, এনবিটিভি

এক সময়ের তরুণ তুর্কি বাপি মিয়া গুটিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন। ঘরে ক্যান্সার আক্রান্ত স্ত্রীর চিকিৎসার টাকা যোগাড় করতে দৌড় ঝাঁপ করছে। একসময় মোটা মাইনা পেতো। কিন্তু করোনা আর এই অসুখ সব হিসেব উলটপালট করে দিলো। চিরদিন ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর কাজ করেছে। অবসর নেওয়ার পর দেখে জমার ঘরে শূন্য। ঘরে বউ সাত চড়ে রা কাড়েনা কিন্তু একমাত্র মেয়ে বাপকে দু চার কথা শুনিয়ে দেয়। অপদার্থ মানুষটি মুখ বুজে সহ্য করে। 

একসময়ের প্রাণচঞ্চল বাপি আজ অতীতের ছায়া। একসময় স্বপ্ন দেখতো সবাই সুখে থাকবে,  অভাব থাকবেনা কারো। এসব সাত পাঁচ চিন্তা করতে চোখ লেগে গেল। এরপর কি হলো সেটা নিয়েই আজকের লেখা।

 কানা কানা কানা। তুভি কানা মায় ভি কানা। কানা নেহি আধি হ্যায়, দেশ কা দুসরা গাঁধি হ্যায়। স্লোগানে গগন ফাটছে। মঞ্চ অনেকে বসে। সবাইকে চিনতে না পারলেও বাপি মিয়া কিছু পরিচিত মুখ দেখতে পেলো। ট্রেড মার্ক লাল নেংটি পরে বেওয়াসায়ী লালা হারামদেব, গোবিন্দ কেজরিওয়াল, ক্রেন বেদী আর লেজে গোবর পার্টির অনেক চেনা মুখ চোখে পড়ল। মিটিং এর গরমাগরম ভাষণ শুনে বাপির রক্ত গরম। এইবার দেশে পরিবর্তন আসবে, কানা হাজারে জয় প্রকাশ হয়ে নতুন সূর্যের আলোয় ভরে দেবে চারিদিক। কানা না হয়ে লোকটার নাম কান্না হলে ভালো হতো।দিনরাত মুখে কান্নার ছাপ।

 মঞ্চের পেছনে গিয়ে বাপির চোখ কপালে উঠলো। অনশনরত নিরামিষভোজী কানা  হাজারে আর লেঙট পরা হারামদেব লুকিয়ে বিরিয়ানি সাটছে। পুলিশ এলো । সবাই ধরা দিলেও সালোয়ার পরে দাড়ি ওয়ালা মুখ ওড়নায় ঢেকে পালাবার চেষ্টা করছিল হারামদেব, ধরিয়ে দিলো বিকট খড়মের আওয়াজ। গোবিন্দ কেজরিওয়াল যাচ্ছিল পায়খানায়, অবশ্য ওকে ধরে রাখা যায়নি  কারণ পুলিশ ডান্ডা পেছনে পড়তেই কাপড়েই কাজ সেরে দিয়েছিল সে।

 চা এর দোকানে বেজায় হইচই লেজে গোবর পার্টির সদস্যরা ভাগাড়ের শকুনের মত হামলে পড়েছে হরির লুট কুড়োতে। টাকাদিচ্ছে দুই বেওসায়ি হামবানি ও প্যাদানি। ওরা লেজে গোবর কে ক্ষমতায় আনার জন্য গোপনে টাকা ঢালছে। খরচের একশো গুন আদায় করে নেবে। পিপড়ে টিপে গুড় বের করে নেওয়া গুজরাটি বানিয়ারা ।

 বাপি একসময় নামী ইংরেজী বাংলা কাগজে লিখতো, এখানে তার একদা গুরু টেলিগ্রাম এডিটর কে দেখে চমকে ওঠে। তাকে এখানে দেখে অবাক হলো মকবর সাহেবও।

বাপিকে একপাশে ডেকে মকবর সাহেব  জানালো, লেজে গোবর পার্টি ক্ষমতায় এলে সে মন্ত্রী হবে। মন্ত্রী হলে সে বাপিকে  কাগজ করতে টাকাও যোগাড় করে দেবে। কেন পুরোনো দল ছেড়ে গোবর মাখতে এলো জানতে চাওয়াই একদা টেলিগ্রাম এডিটর মকবর সাহেব

 জানালো হান্ডার রাজা সেফারস পেন দিয়ে,  ভুল হলো সেফার্স কামানের ঘুষের গুল গল্প দিয়ে আজিব গান্ধীর ক্ষমতা কেড়েছিল তেমনি হমবানি আর পাদানি টাকা দিয়ে  এমপি কিনে ক্ষমতায় আনবে বেনিয়াবন্ধু লেজে গোবর পার্টিকে। জ্ঞান চক্ষু খুলে গেলো বাপির। স্বপ্ন ভেংগে গেল,  কলিং বেলের আওয়াজে। মেয়ে অফিস থেকে বাড়ী ফিরেছে।

Latest articles

Related articles