কাফিল খান এর মুক্তির দাবিতে সরব দেশ

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

IMG-20200713-WA0080

নিজস্ব প্রতিবেদক: এবার কি জেল থেকে মুক্তি পাবেন মানবদরদী চিকিৎসক ডাক্তার কাফিল খান? তার জামিনের আবেদনটি মঞ্জুর হবে উচ্চ আদালতে। এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে দেশের নাগরিকের কাছে। যাই হোক, অবিলম্বে মুক্তি চাই ডাক্তার কাফিল খান এর। এমনই দাবি করে সরব হয়েছে গোটা দেশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় মানবদরদি এই চিকিৎসকের মুক্তি চেয়ে কার্যত আন্দোলন শুরু হয়েছে। আগামীকাল বুধবার, উত্তরপ্রদেশের উচ্চ আদালতে কাফিল খানের জামিনের শুনানি রয়েছে। এখন সেদিকেই তাকিয়ে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ।
গতবছর ১৫ ই ডিসেম্বর মুম্বাই বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ডাক্তার কাফিল খান কে। অভিযোগ ছিল আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় সি এ এ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়ে উত্তেজক মূলক বক্তব্য রেখেছিলেন তিনি। যদিও, অভিযোগের যথেষ্ট প্রমাণ আদালতে শেষ করতে পারেনি পুলিশ। যার কারণে, মে মাসে জামিন হয়ে যায় মানবদরদী এই চিকিৎসকের। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার ঠিক আগেই জাতীয় নিরাপত্তা আইনের বিশেষ ধারায় মামলা করে দেয়া হয় কাপিল খানের বিরুদ্ধে। যার ফলে জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার হল না উত্তরপ্রদেশের এই শিশু বিশেষজ্ঞের। আইনজীবীদের মতে,এই ধারায় বিনা বিচারে টানা বহুদিন কারাগারে বন্দী রাখা যায়। কাফিল খানের ক্ষেত্রে সেই পন্থা অবলম্বন করা হয়েছে। কারাগারের নরক যন্ত্রণা দেওয়ার জন্যই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন অনেকে। দিন আগে কারাগারে বন্দি থাকার নরক যন্ত্রণার কথা উল্লেখ করে চিঠি লিখেছিলেন ডাক্তার কাফিল খান। তার কষ্টের কথা তুলে ধরেছিলেন কেনে। বলেছিলেন তার ছোট্ট মেয়ের কথা। এমনকি, তার মনে হয়েছে তিনি খান বলেই, তার প্রতি এমন অবিচার হচ্ছে। কাফিল খানের স্ত্রী সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখেছেন, কেন তার বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের বিশেষ ধারা লালু করা হলো, প্রকাশ্যে আনতে হবে। অপরাধ করেছে তাদের ছোট্ট মেয়েটি, তাকে দিনের পর দিন বাবাকে ছেড়ে থাকতে হচ্ছে। কেন বারবার মিথ্যা মামলায় তাকে কারাগারে বন্দি করা হচ্ছে। যদিও এইসব প্রশ্নের উত্তর এখনো পাননি ডাক্তার সাহেবের স্ত্রী।
এই পরিস্থিতিতে, আওয়াজ তুলেছে দেশের মানুষ। মুক্তি দিতে হবে ডাক্তার কাফিল খান কে। বিশিষ্ট আইনজীবী ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিরা কফিল খানের মুক্তির দাবি করেছেন। কালকের জামিন মামলার শুনানিতে, আইনজীবীদের উপস্থিত হওয়ার কথা রয়েছে। কফিল খানের মুক্তির জন্য আইনের সর্বদিক থেকে সকল করবেন।
এদিকে, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটারে কাপিল খানের মুক্তি চেয়ে স্লোগান উঠেছে। যেখানে মানবদরদী চিকিৎসকের কাজের কিছু নমুনা তুলে ধরা হচ্ছে। ডাক্তার কাফিল খান এমন একজন চিকিৎসক, যিনি সমস্ত বিপদকে উপেক্ষা করে শিশুদের চিকিৎসা নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা মহামারী কোন ঘটনা, প্রতিক্ষেত্রে চিকিৎসায় নিজেকে আরও দায়িত্বশীল করে তুলেছেন। গরীব ও দুস্থ পরিবারের বাচ্চাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। অসহায় বহু পরিবারের শিশুদের বাঁচিয়ে তুলেছেন এই চিকিৎসক। তার পরেও করোনা অতি মহামারীর অবস্থার মধ্যেও এমন এক দায়িত্বশীল চিকিৎসককে কারাগারে বন্দি করে রাখা হলো। এমন আইনে তাঁকে বেঁধে রাখা হয়েছে, কোনভাবেই যাতে তিনি জামিন না পান। যার কারণে দেশের মানুষ এক হয়ে সরব হচ্ছেন। স্লোগান হচ্ছে ডাক্তার কাফিল খান এর মুক্তি চাই। কারণ, এমন এক মানবদরদী ডাক্তার কে প্রয়োজন অসহায় দুস্থ পরিবারের মানুষদের। উত্তরপ্রদেশের গোরখপুর এলাকার মানুষের কাছে ভগবান। সেই ভগবানকে এভাবে আটকে রাখা মেনে নিতে পারছেন না দেশের মানুষ।
সারাদেশের সঙ্গে,ডাক্তার কাফিল খান এর মুক্তির দাবিতে পথে নামছে সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন। বুধবার যখন উচ্চ আদালতে জামিন হবে, সময় সংগঠনের সদস্যরা রাস্তায় নেমে কফিল খানের মুক্তির দাবি জানাবেন। করোনা কথা মাথায় রেখে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই এই আন্দোলন হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর