হাফিজুর রহমান, আসোসিয়েট এডিটর, এনবিটিভি
এই তো কিছুদিন আগে রাজ্যের এক সাংসদের গাড়ি করে শহর থেকে প্রায় একশো মাইল দূরে এসেছিলাম একটি অনুষ্ঠানের অতিথি হয়ে। কলকাতা থেকে ঘণ্টা দুয়েকের পথ। এ কথা সে কথার পর ঘুরে ফিরে রাজনীতির কথা এল, দেশের কথা হচ্ছিল, নেতার মতে দেশের মাথা একতরফা সিদ্ধান্ত নেয়, কারো কথা শোনে না, স্বেচ্ছাচারী ।
ওর সঙ্গে সহমত হয়েও প্রশ্ন করলাম একই প্রশ্ন তো রাজ্যের মাথার সম্পর্কেও তোলা যায়। তিনি একাই একশো। সব দপ্তর হাতের মুঠোয়। মন্ত্রীরা কাঠর পুতুল, স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারেনা। লোকে ঠাট্টা করে বলে দলে একটি ই পোস্ট বাকি সব
ল্যাম্প পোস্ট। নীরব ছিলেন তিনি। মৌনতা সম্মতির লক্ষণ বুঝে আর কথা বাড়াই নি।
কথা বলতে বলতে জানতে চেয়েছিলাম তার সরকার দুধেল গরুদের সম্পর্কে কি ভাবছে? নাম বলতে পারবোনা বলে শর্ত করিয়ে তিনি যা বলেছিলেন সেটা আমার কলামের পাঠকদের জন্য তুলে দিচ্ছি।
“ভোট পেরিয়েছে এখন মুসলিমদের নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় বা ইচ্ছে দিদির নেই।” শুনে অবাক হইনি কারণ পরপর যা ঘটছে তাতে কথা মিলে যায়।
কি সে ঘটনাগুলি পরপর আপনাদের কাছে তুলে ধরছি। অনেকে হয়ত দিদিকে বা দিদির দল কে সাপোর্ট করেন, করতেই পারেন গণতন্ত্র এ সুযোগ আমাকে, আপনাকে দিয়েছে। কিন্তু ভক্তদের প্রতি এই সাংবাদিকের আবেদন আগে পড়ে বিচার করুন পরে সমালোচনা করবেন ।
নেতার পরিচয় দিয়ে তাকে বিপদে ফেলতে চাইনা তাই নাম গোপন করে লিখছি, একদিন দিদির কাছে আবেদন নিয়ে এক মুসলিম বিধায়ক এসেছিলেন। তিনি চলে যাবার পর দিদির অমৃত ভাষণ এদের জন্য এত করছি কিন্তু এদের দাবির শেষ নেই। যে বিধায়কের কথা হলো সে আমার বন্ধু। দিদির কাছে আবেদনের রেজাল্ট জানতে চাওয়াই তার মুখ ছোট হয়ে গেলো, তার কাজ হয়নি উল্টে সে ২০১৯ এর টিকিট পায়নি। দিদি বেশ ছিলেন ছায়ার সঙ্গে কুস্তি করে গাত্রে হলো ব্যাথা স্টাইলে দিল্লির সুপ্রিমোর সঙ্গে মক ফাইট চালিয়ে যাচ্ছিলেন। বেশ চলছিল, ঘন ঘন মিটিং হচ্ছিলো জননেত্রী আর দিল্লির নেতার। দিল্লির চেয়ারে বসতে চলেছেন এরকম গুজবে ফাটছিলো চারিদিক। পাপ্পু নয় বিরোধী দলের নেতৃত্ব দেবে অগ্নিকন্যা এটা বাতাসে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এমন সময় ঘটলো অঘটন। ইডির ডাকে সাড়া দিয়ে বেরিয়েই যুবরাজ দিল্লি থেকে তোপ দাগল কংগ্রেস ও রাহুল গান্ধীকে টার্গেট করে, ফাটল ধরল বিরোধী ঐক্যে। ভক্তরা চাইলে কি হবে,দলটি যে আঞ্চলিক ।
গোয়া, ত্রিপুরায় বিগ জিরো করে সর্বভারতীয় দাবি করা সোনার পাথর বাটি ছাড়া কিছু নয় এ কথা কে কাকে বোঝাবে?
কেজরিওয়াল পাঞ্জাবে সরকার গড়েছে। ওদিকে নীতিশ কুমার বিহারে ৫৬ ইঞ্চি কে কেটে ২৮ ইঞ্চিতে এনে বিরোধী দলের অলিখিত নেতা হয়ে সারা দেশে চক্কর দিতে শুরু করেছে। গোদের উপর বিষফোড়া রাহুলের পদযাত্রা বিপুল জনতা কাছে টানছে। কাজেই দিল্লি অনেক দূর । এগুলো হালের খবর হলেও সুর
তাল কেটেছিল অনেক আগেই। আপনাদের হয়তো মনে আছে, না মনে থাকলে মনে করিয়ে দিচ্ছি CAA/NRC নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল দিল্লিতে, তখন দিদির দল ছিল অনুপস্থিত। এখন শুনছি মোদী ভালো, আরএসএসও ভালো। ভুললে চলবেনা এখন আরএসএস এর শাখা ৫গুন বেড়েছে। এগুলো কি ভাবে ব্যখ্যা করবো জানা নেই। এখন নিঃশব্দে আধার ভোটার লিংকিং হচ্ছে কেন , দুধেল গরুরা দেরিতে হলেও ধরতে পারছে, লাভ কি? রাত গই বাত গই র মত ভোট পাওয়ার পর কাঁচ কলা দেখালেও কিছু করার নেই। না হলে জনপ্রিয় সুব্রত মুখার্জির জায়গায় আসানসোল দাঙ্গার নায়ক মুসলিম এলাকায় দাড়ায়? দাঙ্গাবাজ ভাটপাড়ার দুর্জন সিং টিকিট পায়!
আসলে দুধেল গরু দূধ দেবে উপায় নেই বলে। ভোট ভাগ হলে ভারত জ্বালাও পার্টি ছলে বলে কৌশলে পাওয়ারে আসবে, এই অঙ্ক ভালো জানে বলে দুধেল গরুরা বিনা প্রতিবাদে দুধ দিয়ে চলেছে, আর দিদির দল দুধেল গাই দের দুধ খেয়ে গায়ে গতরে, আড়ে বহরে বাড়ছে।