নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে ৭০ লাখ টাকার টেন্ডারে অনিয়মের অভিযোগ।

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

received_596867847606016

নাটোর জেলা প্রতিনিধিঃ-
উত্তরবঙ্গের বৃহৎ শিল্প নাটোরের নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের কয়েকটি রাস্তা ও পুরাতন ভবনের সংস্কারের জন্য বরাদ্দকৃত ৭০ লাখ টাকার টেন্ডারে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শর্তানুযায়ী দরপত্র গ্রহণের পর লটারি না করে স্থানীয় সংসদ সদস্যের নিজস্ব লোকদের মধ্যে কাজগুলি ভাগবাটোয়ারা করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন কয়েকজন ঠিকাদার।

স্থানীয় সূত্র ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঠিকাদারদের মাধ্যমে জানা যায়, চিনিকলের কয়েকটি রাস্তা ও পুরাতন ভবন সংস্কারের জন্য ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়। সংস্কার কাজ সম্পন্নের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়। কয়েকটি ঠিকাদার গ্রুপ দরপত্রে অংশ নেন। শর্ত অনুযায়ী দরপত্রে অংশ নেয়া ঠিকাদারদের উপস্থিতিতে লটারি করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। পছন্দমত ঠিকাদারদের ডেকে গোপনে সংস্কার কাজগুলি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে বঞ্চিত কয়েকজন ঠিকাদাররা বলেন, সামান্য সংস্কার কাজেও স্থানীয় সাংসদ ও তার লোকরা মিলের এমডি ও প্রকৌশলীকে হাত করে গোপনে সংস্কার কাজের বরাদ্দ নিয়েছে। যা আমাদের চরম হতাশ করেছে। স্থানীয় সাংসদ মুখে বলেন, তিনি দুর্নীতি-টেন্ডারবাজি করেন না। অথচ তার লোকদের জন্য সুপারিশ সহ আশ্রয়-প্রশ্যয় দেন।

মির্জা খোকন ও আবুল কাশেমসহ কয়েকজন ঠিকাদার অভিযোগ করেছেন যে, একই দরে তারা দরপত্রের ৭টি গ্রুপেই অংশ নেন। শর্তানুযায়ী লটারির কথা থাকলেও গোপনে কাজগুলি ভাগবাটোয়া করা হয়েছে স্থানীয় এমপির নির্দেশে। এই চিনি কলে সম্প্রতি অনিয়ম দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত হয়েছে। তিনি পুনরায় টেন্ডার আহবানের দাবী জানান।

চিনিকলের প্রকৌশলী তারিকুল ইসলাম বলেন, বিধি ও শর্ত অনুযায়ী দরপত্র আহবান ও দাখিল হয়। কোন অনিয়ম করা হয়নি। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারী ও ১ লা ফেব্রুয়ারী দু’টি পত্রিকায় চিনিকলের সেবা খাতের রাস্তা ও জীর্ণ ভবন উন্নয়নের ৭টি গ্রুপের দরপত্র আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। টেন্ডার দাখিলের দিন ধার্য ছিল ২৫ ফেব্রুয়ারী। প্রায় ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দের এই কাজগুলি একই দরে প্রায় ২১ জন ঠিকাদার দরপত্র দাখিল করেন। ফলে লটারির মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। প্রায় ১৫ জন ঠিকাদারের উপস্থিতিতে লটারি অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্যরা লটারি করার সময় আসতে না পারায় টেলিফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করছিলেন।

চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল কাদের বলেন, ঠিকাদার নিয়োগসহ কার্যাদেশ প্রদানে কোন ধরনের অনিয়ম করা হয়নি। সবার উপস্থিতিতে লটারি করা হয়েছে। অন্তত ১৫ জন ঠিকাদার উপস্থিত ছিলেন। যারা কাজ পাননি তাদের দু’একজন হয়ত আবেগের বশবর্তী হয়ে এ ধরনের অভিযোগ করছেন। যা মিথ্যা ও বানোয়াট এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত।

স্থানীয় সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের সাথে এ বিষয়ে জানতে তার মোবাইফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, তিনি কোন টেন্ডারবাজির সাথে জড়িত নন। চিনিকল কর্তৃপক্ষ তাদের নিয়ম অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। তিনি করোনা মোকাবেলায় রাতদিন কাজ করে চলেছেন। ইতিপূর্বে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা সব সময় অনিয়মের মাধ্যমে সুবিধা নিয়েছেন। এখন অবৈধভাবে সুবিধা নিতে না পেরে এমন মিথ্যাচার করছেন। আমি আমার নির্বাচনী এলাকাকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে কাজ করে যাচ্ছি। তাই সুবিধাভোগীরা এসব মিথ্যাচার করে সুবিধা আদায়ের পাঁয়তারা শুরু করেছেন।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর